মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : সাবর্ণী রায়

শাকিবের সঙ্গে কাজ করতে চাই

শাকিবের সঙ্গে কাজ করতে চাই

ওপার বাংলার লাস্যময়ী চিত্রনায়িকা সাবর্ণী। র‌্যাম্প মডেলিংয়ের মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করলেও বেশ কিছু সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজ ও  সিনেমায় অভিনয় করে আলোচনায় এসেছেন। এবার এই নায়িকার ‘ও মাই লাভ’ বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ৯ সেপ্টেম্বর। তিনি এখন রয়েছেন মুম্বাইয়ে। এ দেশ থেকে মুঠোফোনে তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

মুম্বাইয়ে কেন? কোনো শুটিং ছিল কি?

মুম্বাইয়ে একটি ক্যাম্পেইনের শুট ছিল। একটি ব্যান্ডের শাড়ির ফটোশুট। আর আমি তো মুম্বাইয়ে থাকি, কলকাতায় গিয়ে শুটিং করি। এখনো ইন্ডিয়ায় সিনেমার শুটিং শুরু হয়নি। লাগাতার বৃষ্টি, ব্যাক টু ব্যাক ফেস্টিভ্যাল আর আমাদের স্বাধীনতা দিবস ১৫ আগস্ট-সবমিলিয়ে সিনেমার কাজ হচ্ছে না তেমন। তবে নেক্সট মাস থেকে কিছু সিনেমার কাজ শুরু হবে।

 

অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু তো ‘টাপুরটুপুর’ সিরিয়াল দিয়ে, তাই না?

সেটা ঠিক। ২০১১ সালে র‌্যাম্প মডেলিংয়ের মাধ্যমে আমার শোবিজে যাত্রা শুরু। এরপর ২০১২ সালে স্টার জলসার ‘টাপুুরটুপুর’-এ অভিনয় করি। এই সিরিয়ালটি বেশ জনপ্রিয় হয়। আমার অভিনয় ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বলা যায় এই কাজটিকে।

 

কলকাতা আর বাংলাদেশ মিলিয়ে বেশ কিছু সিনেমা করেছেন...

‘টাপুরটুপুর’-এর পর ‘সুপারহিট’, ‘শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয় করি। আর ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আমি আর বাপ্পী জুটি বেঁধে অভিনয় করি কমল সরকারের ‘পাগলামী’তে। আমাকে এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য স্বপন সাহা রিকমান্ড করেছিলেন কমল সরকারকে। আর ৯ সেপ্টেম্বর তো বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে আমার ‘ও মাই লাভ’ সিনেমাটি। আমার নায়ক ঋদ্ধিশ। পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

 

‘ও মাই লাভ’-এ অভিনয়ের জার্নিটা কেমন ছিল?

এটির শুটিং ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিল। ২০২০-এ মুক্তির কথা ছিল; তবে করোনার কারণে মুক্তি আটকে ছিল এতদিন। সেন্সর ছাড় পেয়েছে ছয়-সাত মাস আগে। অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে। এই সিনেমার লিডরোলে অভিনয়ে যুক্ত হওয়াটা ছিল অপ্রত্যাশিত! আসলে এই সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল মাহিয়া মাহির। আর আমার করার কথা ছিল সেকেন্ড রোল; যেটি এখন বাংলাদেশের অমৃতা করেছেন। কোনো এক অজানা কারণে মাহি সিনেমাটি থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর শুটিং করে দুই দিন বসে ছিলাম। আমি মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি হোটেলেই ছিলাম। এরপর তিন দিনের মাথায় প্রযোজক জাহাঙ্গীর সিকদার, মোরশেদ খান হিমেল আর শামসু্িদ্দন টিপু ভাই হোটেলে দেখা করে আমাকে লিডরোল করার অফার দেন। আমি সঙ্গে সঙ্গেই হ্যাঁ বলে দিই। এটি ছিল আমার কাছে ইউনিক ও শকিং বিষয়। প্রায় দেড় মাস মুভিটির জন্য সময় দিয়েছি। বাংলাদেশে মুক্তি পেতে যাওয়া এটিই আমার প্রথম ছবি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে। ছবিটি দর্শক গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে ঢালিউডের আরও ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছা রয়েছে।

 

বাংলাদেশের শিল্পীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এক কথায় অসাধারণ! প্রত্যেক আর্টিস্ট চমৎকার অভিনেতা। এই সিনেমায় বড়লোকের আদুরে নাতনি চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে তার দাদুর কাছে যা চায়, তাই পায়। আলী রাজ আমার দাদা। তিনি তুখোড় অভিনেতা। আর ভিলেন অমিত হাসান, তাকে নিয়ে কী আর বলব! তিনি তো আমার ক্রাশ। তিনি হিরো হলে আমি তার বিপরীতে কাজ করতে একপায়ে খাড়া। অন্যদিকে আলেকজান্ডার বো ফ্যান্টাস্টিক! তিনি ফাইটিং ও অভিনয়ে অনেক হেল্প করেছেন আমাকে। তিনি সবসময় বলতেন, ‘তুমি তোমার মতো খেল’। আর অরুণাদি, বিপাশা কবির ও বড়দা মিঠুসহ অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। সিনেমায় আমার চরিত্রের নাম ‘সুইটি’, যে অনেক রাফ অ্যান্ড টাফ। ঠিক বাস্তবের আমার মতোই। আমি কারও চড় খেয়ে বসে থাকি না, সরাসরি মেরে দিই। এই সিনেমায় দেখবেন হিরোর সঙ্গে হিরোইনও ফাইট করছে। সিনেমাটি একসঙ্গে রোমান্স, পারিবারিক আবহ মিলিয়ে ট্রিপিক্যাল কমার্শিয়াল গল্পের। সেকেলে টাইপের, যা এখন কলকাতায় কমই নির্মিত হয়।

 

সিনেমাটির প্রমোশনে এ দেশে আসবেন কি?

প্রমোশনের জন্য মনে হয় আমার লাগবে না। অন্যদিকে ভিসা জটিলতাও আছে। আমি অনলাইন, ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার মতো প্রমোশন করব। আর বাকি সবাই তাদের মতো করে প্রমোশন করবে।

 

বাংলাদেশের কোন নায়কের সঙ্গে যোগাযোগ আছে

আমার ‘পাগলামী’ সিনেমার নায়ক বাপ্পী চৌধুরীর সঙ্গে তো প্রায় হয়। সে আমার ভালো বন্ধু। ‘শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ’ মুক্তির সময় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। ‘ও মাই লাভ’ করার সময় বাংলাদেশ প্রতিদিনের জন্য একটি ফটোশুটও করেছিলাম। খুবই ভালো লেগেছিল। আমি ভীষণ আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। সম্প্রতি কলকাতায় আদর আজাদের সঙ্গে আড্ডা হলো। ভালোই লেগেছে। তবে আমি নায়ক ইমনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। বাপ্পী, ইমন, আদর আজাদ, সিয়াম, শুভ- এদের সঙ্গে কাজের সুযোগ এলে লুফে নেব। সেটা ওটিটি হোক বা সিনেমা।

 

শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করতে চান না?

কী বলছেন! তিনি তো সুপারস্টার। ২০১৮ সাল থেকেই বলে আসছি, তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাঁর সঙ্গে কাজের অফার এলে তো আমি এক ছুটেই চলে যাব। তাঁর সঙ্গে কাজের বিষয়ে আমি খুবই এক্সসাইটেড। আমি বাংলাদেশের আরও কিছু প্রজেক্ট ধরার চেষ্টা করছি। ভালো অফার হলে কাজ করতে চাই। আসলে করোনার কারণে অনেক পিছিয়ে গেছি।  

 

কোন নায়িকার অভিনয় ভালো লাগে?

পূজা চেরিকে তো খুবই ভালো লাগে। তিনি দারুণ অভিনয় করেন। আর জয়া আহসান, বুবলী-তারা তো বেস্ট।

 

বাংলাদেশের ওটিটি কনটেন্ট নিয়ে কোনো ধারণা আছে আপনার?

তেমন করে নেই। আগে একটি কাজের অফার এসেছিল, করা হয়নি। তবে ভালো কনসেপ্ট হলে করব। এখন তো ওটিটির সময়। ২০২০ সালে একটি হিন্দি ওটিটির কাজ করেছিলাম। ওটিটি আসাতে কিন্তু সিনেমায় কোনো প্রভাব পড়েনি। আমি তো হটস্টারে অনেক সিরিয়াল দেখি। ভালোই লাগে।

সর্বশেষ খবর