সিনেমা মুক্তির আগেই নায়িকা সম্বোধন...
আমার কাছে নায়িকার সংজ্ঞাটা পুরোপুরি আলাদা, এমন নয় শুধু চেহারা থাকলে ও অভিনয় জানলে নায়িকা হওয়া যায়। নায়িকা হতে হলে পরিপূর্ণ হতে হবে। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে- ‘কুস্তিগীর’ ছবিটি ক্যারিয়ারে প্রথম সেন্সরের ছাড়পত্র পেয়েছে। এটি ছাড়পত্র পাওয়ার আগে শুটিং সেটে কেউ আমাকে নায়িকা সম্বোধন করলে আমি উল্টো বলতাম- আমাকে আপু ডাকেন প্লিজ। কিন্তু যখন নায়িকা হিসেবে আমার একটা ছবি সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছিল তখন পরিচালক শাহীন সুমন ভাইকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম আপনারা এখন থেকে আমাকে নায়িকা ডাকতে পারেন। সবচেয়ে বড় বিষয় আমার কোনো সিনেমা মুক্তির আগেই যখন আমাকে নায়িকা বলা হয়, তখন আমার কনফিডেন্স লেভেলটা আরও বেড়ে যায়। নিজেকে যেন প্রমাণ করার অনুপ্রেরণা পাই।
দুই বাংলার দুই সুপারস্টারের সঙ্গে...
আমাদের সুপারস্টার শাকিব খানের বিপরীতে ‘আগুন’ ছবিতে নাম লেখানোর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। এই সিনেমার ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমার আর শাকিব খানের কিছু রোমান্টিক দৃশ্য এবং গানের শুটিং বাকি রয়েছে। এ ছাড়া ‘কমান্ডো’ সিনেমায় ওপার বাংলার সুপারস্টার দেব আমার নায়ক। করোনার কারণে ছবিটা বেশ কয়েকবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সিনেমাটির চল্লিশ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা প্রথমে দুবাইয়ে শুটিংয়ের চেষ্টা করেছি। সেখানে ব্যর্থ হয়ে থাইল্যান্ডে প্ল্যান করা হলো। সেখানেও কভিডের কারণে দেশটির সরকার আমাদের অনুমতি দিল না। পরে যখন অনুমতি পেলাম তখন আবার দেবের শিডিউল পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে দেব জানিয়েছেন, দেরিতে হলেও ছবিটার কাজ সম্পন্ন হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না, বাকিটা দেখা যাক কপালে কি আছে।
স্বাচ্ছন্দ্য... উপস্থাপনা নাকি অভিনয়
এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই, আমার শুরুটা হয়েছিল ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপ দিয়ে। তখন আমি ‘ফুটবল ফাটাফাটি’ নামের একটা প্রোগ্রাম উপস্থাপনা করতাম। এটা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, মানুষ আমাকে ফাটাফাটি আপু বলে ডাকত। এরপর আমি দুটি বিপিএলে উপস্থাপনা করেছি। বঙ্গমাতা ফুটবল কাপের অফিশিয়াল প্রেজেন্টার ছিলাম, তো শুরুতে মানুষ আমাকে উপস্থাপিকা হিসেবেই চিনেছে। তাই ওই খানে আমার শিকড়ের টানটা একটু বেশি। আপাতত সেভাবে উপস্থাপনায় ফেরার মতো সময় আমার হাতে নেই। ওরকম প্ল্যানও করছি না, তবে কোনো বিগ বাজেটের প্রোগ্রাম হলে সে ক্ষেত্রে শিডিউল মিলিয়ে হয়তো দেখা যেতে পারে।
ওটিটি প্ল্যাটফরম নিয়ে ভাবনা...
আসলে এখন বিভিন্নভাবে দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। একশ্রেণির দর্শক ওটিটি পছন্দ করছে, আরেক শ্রেণি নাটক আবার সিনেমারও আলাদা দর্শক রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি মাধ্যমের আলাদা একটা দর্শক তৈরি হয়েছে। এখন শহরকেন্দ্রিক যান্ত্রিক জীবনে মানুষ সময়ের অভাবে বিনোদনের জন্য ওটিটিকে বেছে নিচ্ছে। যদিও সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার যে একটা আনন্দ তা আসলে মোবাইল-কম্পিউটারে পাওয়া যায় না। এরপরও আমি ওটিটিকে সাধুবাদ জানাই।
প্রেম-ভালোবাসা-বিয়ে, সুখবরটা পাব কবে...
আমি প্রচন্ড প্রেমিকা টাইপের একটা মেয়ে। তবে এই মুহূর্তে আশপাশে যে ধরনের প্রেম-ভালোবাসা দেখি, তাতে আমি বিশ্বাসী নই। কারণ এ ধরনের প্রেম আমার কাছে একটুও প্রেম মনে হয় না। আমার কাছে মনে হয় এগুলো আসলে কেউ কারও অভ্যাস বা প্রয়োজন এ জন্যই হয়তো বা তারা সম্পর্কে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে গেলে, আমি এ যুগের প্রেম থেকে একটু আলাদা থাকি। আরেকটা ব্যাপার, বিয়ে নিয়ে আমার প্রচন্ড ভীতি কাজ করে। যখন দেখব সবকিছু সেটেল হয়ে গেছে, সুন্দরভাবে কাজ করতে পারছি, ক্যারিয়ার একটা ভালো জায়গায় দাঁড়িয়েছে, তখন হয়তো এই দুষ্টু বুদ্ধিগুলো মাথায় চাপলেও চাপতে পারে।
ছবি : নয়ন আহম্মেদ