শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : মোশাররফ করিম

যতদিন বাঁচি অভিনয়ই করতে চাই

যতদিন বাঁচি অভিনয়ই করতে চাই

শীর্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম। দীর্ঘদিন ধরেই টিভিনাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করছেন সদর্পে। একসময় সরব ছিলেন মঞ্চে। দুই বাংলায় কিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। সম্প্রতি কলকাতায় গিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে।  সেখান থেকে ফিরে কথা বলেছেন পান্থ আফজাল-এর সঙ্গে

 

কলকাতা থেকে কবে ফিরেছেন?

গত পরশুদিন। মালয়েশিয়া থেকে ফিরেই কলকাতায় যাওয়া। বেশ কিছুদিন ছিলাম কলকাতায়। কলকাতা দেখেছি, ঘুরেছি, নিজেকে দেওয়ার মতো করে কিছু সময় কাটিয়েছি আর কি! 

 

শুটিংয়ে এখন (গতকাল)?

হুমম... দেশে ফিরেই একটি কাজের শুটিং করছি, দেশীয় একটি ওটিটির জন্য। এটি একটি ওয়েবফিল্ম।

 

কলকাতায় গিয়েছিলেন কি সিনেমার শুটিংয়ে?

না, একটি গেট-টুগেদার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলাম। ওটিটি প্ল্যাটফরম হইচই ৫ বছরে পৌঁছেছে। তাই দুই বাংলার আমন্ত্রিতজনদের নিয়ে কলকাতার আইটিসি রয়েল বেঙ্গলে একটি মিলনমেলার আয়োজন করেছিল হইচই। সবমিলিয়ে ভালোই ছিল অনুষ্ঠানটি।

 

আপনাকে অভিবাদন জানানো বুম্বাদার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সেটি কি এই মিলনমেলার মুহূর্তের?

হ্যাঁ, হইচই-এর অনুষ্ঠানে কেউ একজন তুলেছিল।

 

‘মহানগর’, ‘দৌড়’ দিয়ে দুই বাংলায় সাড়া ফেলেছেন...

হইচই থেকে মুক্তি পাওয়া এই দুটি ওয়েব সিরিজই দুই বাংলার মানুষ পছন্দ করেছেন। ভালো কাজে সবাই প্রশংসা করবে, এটাই স্বাভাবিক।

 

‘মহানগর-টু’ দিয়ে ওসি হারুণ আবারও ফিরছেন। সত্যি?

হ্যাঁ। হইচই ও নির্মাতা ঘোষণা দিয়েছেন। এবং ‘মহানগর-টু’ দিয়েই সিরিজটির পরিসমাপ্তি হবে। মানে এটি হতে যাচ্ছে মহানগরের ফাইনাল এপিসোড।

 

ব্রাত্য বসুর নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন শুনেছি।

ব্রাত্য বসুর ‘হুব্বা’? না, এখনো আমার অংশের শুটিং শুরু হয়নি। অক্টোবর থেকে শুরু করার কথা। তবে অন্য কলাকুশলীদের নিয়ে শুটিং হয়েছে বলে শুনেছি।

 

কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার একটি লুক ভাইরাল...

এটা আগের ছবি। তখন একটা লুক সেট করা হয়েছিল। এই সিনেমায় আমার চরিত্রটা একটু ভিন্ন। পশ্চিমবঙ্গের কুখ্যাত গ্যাংস্টার হুব্বা শ্যামলের জীবন অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে সিনেমাটি। হুগলির গ্যাংস্টার হুব্বার চরিত্র ছিল বর্ণাঢ্য। সেটিই আমার চরিত্র। চরিত্রটার মধ্যে আরোপিত কিছু নেই। গল্পটা যেমন একদম আলাদা, চরিত্রটাও।

 

নিয়ামুল মুক্তার ‘বৈদ্য’র শুটিং কবে শুরু করবেন?

ওয়েবফিল্মের শুটিং শেষ করেই এটির শুটিং শুরু করব। ‘বৈদ্য’ সিনেমায় আমি ‘বৈদ্য’ চরিত্রেই অভিনয় করছি। ড্রামা ও থ্রিলারের মিশ্রণ রয়েছে সিনেমাটিতে।

 

‘বিলডাকিনী’ ও ‘গাঙকুমারী’ কবে মুক্তি পাবে?

দুটি কাজই ফজলুল কবীর তুহিনের। ভালো হয়েছে কাজ দুটি। তবে সবকিছু সম্পন্ন করে কবে মুক্তি পাবে তা নির্মাতাই ভালো বলতে পারবেন।

 

মণীশ বসুর ‘গু-কাকু’ সিনেমায়ও কাজ করেছেন। ওপার বাংলায় তাহলে নিয়মিত কাজ করবেন? 

২০২১ সালে ব্রাত্য বসুর ‘ডিকশনারি’ সিনেমা দিয়ে ওপার বাংলায় যাত্রা শুরু। এরপর তো মণীশ বসুর ‘গু-কাকু’, ব্রাত্য বসুর আরেকটি সিনেমা ‘হুব্বা’। ভালো কাজ হলে ওপার বাংলায় কাজ করতে সমস্যা নেই।

 

কোন তাগিদ থেকে অভিনয় করেন?

আমি অভিনেতা। তাই যতদিন বাঁচি অভিনয়ই করতে চাই। আমি কাজটা করে আনন্দ পাই। আর এই আনন্দটা আমি সারা জীবন পেতে চাই। ভালো না লাগলে সেটা তো আমি করি না, করতে পারি না। মানুষ আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। মাঝে মধ্যে অনেক ভক্ত দেখা করতে আসেন। একবার দুইবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আমাকে দেখে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল তারা। আমি মানুষের এত ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য কি না, তা ঠিক জানি না।

 

শিল্পী হিসেবে সব কাজ করেই কি সন্তুষ্ট থাকতে পারেন?

অনেক কাজ করতে গিয়ে আমি অতৃপ্তও থাকি। সব কাজ যে আমাকে সেটিসফাইড করে এমন তো নয়। আমি খুব টেকনিক্যাল উত্তর দিতেও রাজি না যে, সব সন্তান আমার কাছে সমান! সব সন্তান তার পিতা-মাতার কাছেও সমান হয় না। সেটা সন্তানের কারণেই হয় না। একেকজনের ধরন তো একেক রকম। আর আমি কখনো আমার কোনো কাজ নিয়ে গলা বড় করে কিছু বলিওনি, এ ধরনের লজ্জা আমার আছে। তারপরও বেশ কিছু কাজ করে আমিও সেটিসফাইড।

 

গান লিখতে, গাইতে পারেন। ইদানীং গান লিখছেন না?

বহু বছর হলো। সেই ছোটবেলায় লিখেছিলাম। তখন গানের কথাগুলো এমনিতেই মনের চিত্রপটে ধরা দিত। আহা, সেই সময়! তবে দলে থাকলে গান লেখা হতো। এখন তো হতে চায় না। এখন তো মিডিয়ায় ঢুকে ট্যাকার লাগি বন্দী হইয়া গেছি।

 

নিজের লেখা কবিতা নিয়ে বই বের করার ইচ্ছা আছে?

অনেকেই বলে কিন্তু আমার লজ্জা লাগে। অনেক কবিতা লিখেছি এবং কিছু কবিতা পত্র-পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছে। তবে আক্ষেপ, আমার কবিতাকে অন্যসব কবিদের লেখা কবিতার মতো মূল্যায়ন করা হয়নি। ‘তারকাদের কবিতা’ শিরোনামে কেন ছাপানো হবে!

 

টেলিভিশনের জন্য এ পর্যন্ত কি কোনো নাটক লিখেছেন?

কোনো নাটক লেখাই শেষ করতে পারিনি। লিখছি, ভালো লাগেনি; সেটা আবার ছিঁড়ে ফেলে দিছি। একটি লিখছি- নাম ‘তালাক’। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা ডিপার্টমেন্ট আমার লেখা তিনটি নাটক করেছে।

 

থিয়েটারে ফিরবেন কবে?

দুই দশক ধরে থিয়েটার করি। থিয়েটার হলো শিকড়, ফিরতেই হবে এক দিন।

 

নির্মাণে আসবেন?

আমি লক্ষ্যস্থির করে কোনো কাজ করি না। লক্ষ্যস্থির করে দৌড় দেওয়া সেটা আমার জীবনে ঘটেনি। এমনও হতে পারে আমি অসাধারণ নির্মাণ করলাম। আবার এমনো হতে পারে কোন দিন নির্মাণেই আসলাম না। সো, এটা এখনো জানি না।

সর্বশেষ খবর