ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক জিয়াউল রোশান। ক্যারিয়ারের ছয় বছরের মাথায় এসে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। একের পর এক করছেন চলচ্চিত্র ও ওয়েবফিল্ম। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

শুটিং নেই। তবে ডাবিং করতে যাচ্ছি, সৈকত নাসিরের ‘পাপ’ সিনেমার।

জন্মদিনেও কাজ...

ওহ, আমি তো আমার জন্মদিনই ভুলে যাই! তবে প্রিয়জনেরা মনে করিয়ে দেয় বিভিন্নভাবে সারপ্রাইজ দিয়ে, উইশ করে। আর জন্মদিন নিয়ে আমার তেমন কোনো মাথাব্যথা থাকে না। জন্মদিন সেলিব্রেশন নিজে থেকে কখনো করিনি। প্রথম থেকেই আমার হবু স্ত্রীই সেলিব্রেট করে থাকে। সেই সব করে। আমাদের রিলেশন তো সিনেমায় আসার আগে থেকেই ছিল। ও তখন আসত কেক আর ফুল নিয়ে। প্রত্যেক সময় সে ভিন্নভাবে সারপ্রাইজ দিত। সেটি এখনো করে। আমার ফ্যামিলি মেম্বাররাও আমার জন্মদিনটা তাদের মতো করেই করে। আমার তেমন করে পরিকল্পনা থাকে না।

শুনেছিলাম বড় একটা চমক দেখাবেন। সেটি কবে?

কলকাতায় বিগ বাজেটের একটি সিনেমা করছি। খুবই বড় পরিসরে। কলকাতা যাচ্ছি এই ১৪ তারিখে লুক সেট করতে। পোস্টার শুটও হবে। আরও অনেক সারপ্রাইজ থাকবে বলে সেখানকার সবাই জানিয়েছেন। আমি নাম ভূমিকায় অভিনয় করছি এটিতে। আর নেক্সট মাস থেকে এই সিনেমার শুটিং হওয়ার কথা। তবে সবকিছু অফিশিয়ালি জানাতে চাই। এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত মুখ খুলতে পারছি না। আপাতত এটি নিয়ে চমকই থাকুক, কী বলেন?

নতুন আরও কোনো সিনেমার অফার...

বেশ কিছু নতুন সিনেমার কাজের অফার ছিল। তবে গল্প ও অন্যান্য বিষয়ে একমত হতে পারিনি। তাই ছেড়ে দিয়েছি। কিছু আছে ভালো গল্পের ও চরিত্রের। গতকাল আরও দুটি সিনেমার মিটিং করেছি। দেখা যাক কী হয়! তবে সব ঠিকঠাক হলে অফিশিয়ালি জানাব।

মুক্তির অপেক্ষায় কোন কোন সিনেমা রয়েছে?

অনেক সিনেমাই তো মুক্তির অপেক্ষায়। এর মধ্যে পাপ, রিভেঞ্জ, বিট্রে, প্রেম পুরাণ, জামদানি ও করপোরেট রয়েছে। নতুন সিনেমা সৈকত নাসিরের ‘লন্ডন লাভ’ করেছি। বরাবরই আমার অ্যাকশন দৃশ্য খুবই পছন্দের। আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এই সিনেমাটি করে তাই অনেক আরাম পেয়েছি।

মায়া : দ্য লাভ সিনেমার আপডেট কী?

এ মাসের শেষের দিকে লাস্ট লটের কাজ হবে। জসিম উদ্দিন জাকির বানাচ্ছেন। আমার সঙ্গে বুবলী, সাইমন সাদিক ও আনিসুর রহমান মিলনও রয়েছেন।

কিছুদিন আগে একটি ওয়েবসিরিজ করলেন...

এশিয়ান টিভির একটি প্রজেক্ট, জাকারিয়া মাসুদের নির্মাণে একটি ওয়েবসিরিজও করছি। নাম ‘হারাধনের ১০টি ছেলে’।

সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমায় রিশান চরিত্রটি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে...

এটি বিশাল অর্জন আমার জন্য। হলে গিয়ে দেখেছি, সিনেমাটি দেখে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। আমার নাম ধরে অনেকে চিৎকার করছেন। অ্যাকশন দৃশ্য দেখে হাততালি-বাহবা দিচ্ছেন। আমার ভয়েজ ও চরিত্র, অভিনয় নিয়ে কথা বলছেন- এটা সত্যিই ভালোবাসার।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রিশান চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

নৌবাহিনী থেকে আসা একজন অফিসার রিশান। তিনি স্পেশাল নিয়োগ পেয়ে র‌্যাবে আসেন। এরপর সুন্দরবনের জলদস্যু মুক্ত করতে অপারেশনে অংশ নেন। চরিত্রটি নিয়ে আমার অনেক ভালোবাসা রয়েছে। আমাদের কমান্ডার রিয়াজ ভাই। আমরা তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করি। জলদস্যু নির্মূল করতে সহযোদ্ধা সিয়ামের সঙ্গে আমি অভিযান চালাই। এই চরিত্রে কিছু দিক রয়েছে। একদিকে যেমন দায়িত্ববোধ, অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবন। ড. অদিতির সঙ্গে সম্পর্ক, ভালোবাসা থাকলেও রিশানকে নিজস্ব দায়িত্ব সম্পর্কে সদা ব্যস্ত থাকতে হয়।

অনেকেই মনে করেছিলেন এটি র‌্যাবের ডকুমেন্টারি। আমি বলতে চাই, এটি সিনেমাটিক ফ্লেভারে ভরপুর। শতভাগ কমারশিয়াল ফিল্ম। এর মধ্যে যেমন র‌্যাবের লাইফ, জলদস্যু নির্মূল অভিযান, অ্যাকশন, উত্থান-পতন রয়েছে তেমনি রয়েছে ব্যক্তিগত জীবন, প্রেম, ভালোবাসা, পরিবারসহ অনেক কিছু। সিনেমাটি বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে। অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে, এটি বাংলাদেশি সিনেমা। যাঁরা দেখেছেন তাঁরা জানেন।

বিয়ে করলে কি জনপ্রিয়তা কমে?

সেটা কখনই মনে করি না। ভক্তদের যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা তো আসলে মন থেকেই ভালোবাসেন। তারকার কাজ ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন ভক্তরা। যাঁরা বিয়ে করেন, তাঁরা দুজন মিলে আরও শক্তিশালী হন। এমনকি স্ত্রীদের প্রতি যেসব তারকার রেসপেক্ট থাকে, স্বামীদের প্রতি যেসব তারকার রেসপেক্ট থাকে, তাঁদের ভক্তরা আরও বেশি খুশি হন।

প্রেমিকার সঙ্গে বাগদান হয়েছে। বিয়ে করবেন কবে?

আগে ওর পড়াশোনা শেষ হোক। এখন লাস্ট সেমিস্টারে। জব করতে চায়। আমার কাছে সময় চেয়েছে বছরখানেক। এরপর না হয় দুই পরিবার বসে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করব।