শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : শরীফুল রাজ

সংসার ভাঙার মতো কিছু করিনি, পরীকেই ভালোবাসি

সংসার ভাঙার মতো কিছু করিনি, পরীকেই ভালোবাসি

শরীফুল রাজ। একে একে ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ আর ‘দামাল’ ছবির সাফল্যে রীতিমতো এই নায়ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেলেন।  এমন সাফল্যের খবর যখন দর্শকের হৃদয়ে চর্চিত তখনই আবার সংসারে ঝড়ের খবরে উৎকণ্ঠিত তাঁর দর্শক-ভক্তরা। এ বিষয়ে রাজ বলেন, ‘আমি সৎ, কিছুই করিনি’। তাঁর বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

একই বছরে তিন ছবির সাফল্যে ভাসছেন, কেমন লাগছে?

আসলে আমি আমার যে কোনো কাজের প্রতি সবসময়ই সিনসিয়ার থাকি। তাই সাফল্য আমার প্রাপ্য হয়ে দাঁড়ায়। মিডিয়ায় আমার জার্নি প্রায় সাত-আট বছরের। আমার এই জার্নির সাফল্যের পেছনে পুরো অবদান নির্মাতার, যাঁরা আমাকে প্রপারলি গল্প, চরিত্র ও ডিরেকশন দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আর আমি আমার সেরা চেষ্টা দিয়ে একটি সমৃদ্ধ কাজ উপহার দেওয়ার প্রত্যয় বুনেছি। সো, আই অ্যাম রিয়েলি লাকি, কারণ আমার ছবির নির্মাতারা এতটাই ক্রিয়েটিভ যে, তাঁদের কারণে আমি আমার সেরা কাজের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আমার নির্মাতাদের এবং দর্শক যারা একটি সঠিক কাজের মূল্যায়ন করেছেন তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আবারও বলি, কাজ হচ্ছে আমার কাছে ইবাদতের মতো।

 

সমৃদ্ধ কাজ দিয়ে যখন একে একে সাফল্যের হাওয়ায় ভাসছেন তখনই আপনার স্ত্রী পরীমণি আপনার সঙ্গে অন্য নায়িকাকে জড়িয়ে অভিযোগ তুলেছেন, ঘটনাটি আসলে কী, খুলে বলবেন?

দেখুন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি আগেই বলেছি আমি আমার যে কোনো কাজের প্রতি সব সময়ই সিনসিয়ার থাকি। সংসার এবং স্ত্রী-সন্তানের প্রতিও তাই। এরপরও কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনল জানি না। এতে আমি রীতিমতো শকড। আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগই মিথ্যা। আমি সব সময়ই সবক্ষেত্রে সৎ থাকার চেষ্টা করি। তাই সংসার, স্ত্রী, সন্তান ফেলে অন্য সম্পর্কে জড়াব, এমন অনৈতিক কথা ভাবতেই পারি না। আমার কথা হলো- যে যাই বলুক, যে কারণেই বলুক আমি এসব নিয়ে মোটেও বিচলিত নই। কারণ মিথ্যা কখনো স্থায়ী হয় না।

 

তাহলে আপনার স্ত্রী পরীমণি আপনার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনলেন কেন?

রিয়েলি, আমি কিছুই জানি না, কিছুই করিনি। ও কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনল আমি চাই তার জবাব সে দেবে। সে যা বলেছে তা যথাযথভাবে সবার সামনে ক্লিয়ার করুক। আমি যেহেতু এমন কিছুই করিনি, তাই এ বিষয়ে আমি কেন কথা বলব। সবার সংসারে কমবেশি খুনসুটি হয়েই থাকে, তাই বলে ব্যক্তিগত বিষয়কে অন্যভাবে জনসম্মুখে প্রচার বা প্রকাশ করা মোটেও শোভন নয়। আবারও বলি, ছোটবেলা থেকেই সব বিষয়ে আমি সৎ এবং সিনসিয়ার থাকার চেষ্টা করি। এ ছাড়া নিজের ব্যক্তিগত বিষয় কারও কাছে শেয়ার করা পছন্দ করি না। কারণ, আমি আমার ব্যক্তিগত প্রতিটি বিষয়কে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।

 

পরীমণির সঙ্গে আপনার সংসার ভাঙার আশঙ্কাও অনেকে করছে, বিষয়ে কী বলবেন?

আমি আসলে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তবুও বলব আমার পক্ষ থেকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, হুট করে সংসার ভেঙে যাবে। আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি। পরীকে আমি অনেক ভালোবাসি এবং ভালোবেসে যাব। আমাদের একটি আদরের সন্তানও আছে। তাই আমি বলব, পরী যদি নিজের অজান্তে কোনো ভুল বুঝে থাকে তবে সে তার সুচিন্তা দিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক করবে ও সামলে নেবে। আমার আর বলার কিছু নেই।

 

তাহলে আপনার স্ত্রী পরীমণি কী কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার, নাকি আপনাদের সুখের সংসার ভাঙতে আড়ালে কেউ কলকাঠি নাড়ছে?

দেখুন, আবারও বলছি, আমি এসবের কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। পরীমণি কেন এমন করল একমাত্র সেই তা জানে এবং আমি আশা করব সে প্রকৃত বিষয়টি দ্রুত পরিষ্কার করবে।

 

আপনাদের ভালোবাসা, বিয়ে সন্তানের পর এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষ কিন্তু আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে, অবস্থায় কী করবেন?

আসলে কারও বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আমি এখনো বলব, আমরা ভালো আছি। পরীমণি তার দেওয়া প্রকৃত বক্তব্য সবার সামনে তুলে ধরলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এ নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।

 

আবারও চলচ্চিত্রের কথায় আসি, চলচ্চিত্রের দীর্ঘ খরার মধ্যেপরাণ, ‘হাওয়া দামাল দর্শক নজর কাড়ল কীভাবে?

আসলে এই সাফল্যের রহস্য হচ্ছে আধুনিকভাবে গল্প বলা ও নির্মাণ করা। দীর্ঘদিন ধরে দর্শক কিন্তু ঘরে বসেই বিভিন্ন ডিভাইসে ছবি দেখছে, সিনেমা হলে যাওয়ার তাগিদ বোধ করছে না। কিন্তু যখন তারা সময় উপযোগী আধুনিক গল্পের চলচ্চিত্র পেল তখনই তারা সিনেমা হলে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। তাই এই আধুনিকতা ও সময়ের পথে হাঁটা অব্যাহত রাখতে পারলে আমার বিশ্বাস দর্শক আর সিনেমা হল ছেড়ে বাসায় বসে চলচ্চিত্র দেখবে না। সিনেমা হলে দর্শক ধরে রাখতে পারলে চলচ্চিত্র জগৎ ও এই জগতের মানুষের প্রভূত কল্যাণ হবে।

 

পরপর তিন ছবিতে নিজের তাক লাগানো অভিনয়ের রহস্য কী?

না, এতে কোনো রহস্য নেই। আমি আসলে আহামরি সাফল্যের প্রত্যাশা নিয়ে অভিনয় করি না। আমি গল্প, চরিত্র ও চিত্রনাট্য কতটা আধুনিক ও বাস্তবসম্মত তা জেনে বুঝেই কাজটা হাতে নিই এবং মনপ্রাণ ঢেলে সিনসিয়ারলি সেই গল্প ও চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণের চেষ্টা করি। এর ফলেই দর্শক রিয়েলিটির ছোঁয়া পেয়ে আমার কাজ পছন্দ করেছে এবং আমি সফল হয়েছি। আমি সবার সহযোগিতা ও দোয়া চাই যেন আগামীতে আরও সমৃদ্ধ কাজ উপহার দিতে পারি।

সর্বশেষ খবর