জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। যিনি তাঁর সুনিপুণ অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। বলিউডেও কাজ করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরব থেকেছেন তিনি। সবকিছু মিলিয়ে তাঁর সঙ্গে শোবিজ প্রতিবেদকের কথোপকথন-
এখনো দেশজুড়ে সহিংসতা চলছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। আমি সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। সবাইকে শান্ত থাকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন যদি আমাদের হিন্দু ভাই-বোন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান সহিংসতা নিন্দনীয়। এ বিপ্লব অযৌক্তিক আক্রমণের কারণে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। আসুন, আমরা একসঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি। দয়া করে সব ধরনের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করুন।
এর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন সিনেমা প্রযোজক হয়ে আসছেন...
প্রয়াত অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি ও প্রয়াত অভিনেতা সোহেল চৌধুরীর কন্যা লামিয়া চৌধুরী একটি সিনেমা নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। ছবির নাম ‘মেয়েদের গল্প’। এ ছবির নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে থাকব। আসলে আমি অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম, যে গল্পটা আমি বলতে চাই, দেখতে চাই।
আবার বলিউড-টলিউডের ছবিতে দেখা যাবে?
আসলে পছন্দের গল্পের অফার পেলে অবশ্যই করব। এরই মধ্যে কিছু কাজ হয়েছে। সময় হলে সবকিছু একে একে জানতে পারবেন।
‘মাস্টার’-এ অভিনয়...
হ্যাঁ, ছবিটি পরিচালনা করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ‘নোনাজলের কাব্য’ ছবির নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। ‘মাস্টার’ ছবির কাজ করে খুবই তৃপ্ত। এ ছবিতে আমার চরিত্রটি মুখ্য না হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন ইউএনওর চরিত্রে অভিনয় করেছি। মূল চরিত্রে আছেন নাসির ভাই। এটি একটি জীবনবোধের গল্প ও চরিত্র। এমন চরিত্রে অভিনয় করার যথেষ্ট সুযোগ থাকে এবং এতে দর্শক আগ্রহ থাকে বলে এমন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
স্বাধীনচেতা ও সাহসী নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন...
আমি সর্বদা স্রোতের বিপরীতে হাঁটি। সচেতনভাবে বেছে বেছে নারীপ্রধান চলচ্চিত্রে কাজ করছি। তাই এরকম চলচ্চিত্রের অফার খুবই কম আসে। এখন বাস্তবধর্মী চরিত্র ছাড়া অভিনয় করতে রাজি নই। হরর, কমেডি, থ্রিলার, রোমান্টিক- সব ধরনের ছবি করতে চাই। আসলে ভালো কাজের জন্য সততা ও পরিশ্রমের বিকল্প নেই। কাজের মতো কাজ হলে অর্জন একদিন আসবেই। শুধু অর্জনের জন্য নয়, শিল্পের জন্য কাজ করতে হবে। তবেই ক্যারিয়ারে যুক্ত হবে সম্মান।
গত কয়েক বছরে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দর্শক খুঁজে পাচ্ছে। আগে আপনাকে এক্সপ্লোর করার ঘাটতি ছিল?
এ ইন্ডাস্ট্রির একটি বিষয় আছে, একটি চরিত্র ক্লিক করলে সেটাই ফিক্সড হয়ে যায়। কোনো শিল্পী একটা চরিত্র ভালো করলে ওইরকম চরিত্র ছাড়া ভিন্নরকম ও চ্যালেঞ্জিং কোনো চরিত্রে ডাক পায় না খুবই সহজে। নির্মাতা-প্রযোজকদের মনে সর্বদাই একটি বিষয় থাকে, ‘সে কি এই চরিত্রটি ক্যারি করতে পারবে?’ যেমনটি আমার ক্ষেত্রে অনেকেই ভেবেছিলেন ২০১৮ সালের আগে। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন সৃজিত ও অনিন্দ্য। তারা আমাকে ভাবনায় রেখেছিলেন বলেই ‘মুসকান জুবেরী’ চরিত্রটি করতে পেরেছিলাম। অন্যদিকে সাদও ভেবেছিল বলেই ‘রেহানা মারিয়াম নূর’ এর মতো একটি কাজ আমার দ্বারা করা সম্ভব হয়েছিল। এরপর করলাম বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’তে অক্টোপাস। এরা আমাকে নিয়ে ভেবেছেন। আমি বলব ২০১৭-এর আগ পর্যন্ত আমি কাজগুলো ইনজয় করতাম না। তখন ভালো লাগত না। তখন অ্যাকটিংয়ের জন্য নিজেকে ফোকাস করতে পারিনি। তবে এখন যা করছি ভালো লাগা থেকেই করছি।
নাটকে ফিরবেন না?
নাটকের যে বাজেট তাতে আমি যা করতে চাই বা নতুন কিছু এক্সিপেরিমেন্ট করতে চাই-সেটা কি সম্ভব? তবে যখন দেখব সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজে আমাকে দিয়ে হচ্ছে না বা কেউ নিচ্ছে না, তখন ফের নাটকেই ফিরে যেতে পারি।