শুটিংয়ে এলেই এ বাড়িতে থাকতেন উত্তম কুমার। গ্রামীণ হাওড়ায় এ নামেই পরিচিত হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের গোহালপোতা। এ গ্রামে কলকাতার চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পরিবেশন সংস্থা চন্ডীমাতা ফিল্মসের কর্ণধার প্রয়াত সত্যনারায়ণ খাঁর বাড়ি রয়েছে। সত্যনারায়ণ বাবুর ব্যক্তিগত সখ্য ছিল উত্তম কুমারের সঙ্গে। সেই সূত্রেই চন্ডীমাতা ফিল্মসের অনেক সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন উত্তম কুমার এবং সেসব ছবির অনেক দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল গোহালপোতায়।
এ গ্রামের মাঠ, গাছপালা, নদীর ছবি তোলা রয়েছে ধন্যি মেয়ে, সন্ন্যাসী রাজা, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, কমললতা, হার মানা হার, বনপলাশীর পদাবলির মতো অনেক ছবিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, উত্তম কুমারের থাকার জন্য গোহালপোতায় বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছিলেন সত্যনারায়ণ বাবু। তাঁর পুত্রবধূ মৃদুলা খাঁ জানান, তিন তলা ওই বাড়িতে প্রথম শ্রেণির হোটেলের মতো সুবিধা ছিল। সত্যনারায়ণ বাবু এবং তাঁর দুই পুত্র মারা গেছেন। বড় পুত্রবধূ মৃদুলাদেবী এখন কলকাতায় থাকেন। তবে গোয়ালপোতার ওই বাড়ি এখনো খাঁ পরিবারের মালিকানায় রয়েছে। মৃদুলাদেবীর কথায়- ‘উত্তম কুমার টানা ৩০ বছর আমাদের বাড়িতে এসেছেন। শেষবার এসেছিলেন ১৯৮০ সালে ‘প্রতিশোধ’ ছবির শুটিং করতে। আমি বিভিন্ন সময় তাঁর জন্য শরবত তৈরি করে নিয়ে গেছি। তিনি বেশির ভাগ সময় অভিনয়ের চিন্তায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। ডাকলে মনে হতো হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠলেন।’
মহানায়কের স্মৃতি এখনো টাটকা স্থানীয় বাসিন্দা সরস্বতী পালের মনে। তার কথায়- ‘১৯৭৪ সালে এখানেই হয়েছিল ‘বনপলাশীর পদাবলী’ সিনেমার শুটিং। আমার তখন সদ্য বিয়ে হয়েছে। পাড়ার অন্য মহিলাদের সঙ্গে উত্তম কুমারকে দেখতে এসেছিলাম।’ সত্যনারায়ণ বাবুর মৃত্যুর পর তাঁদের ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়ে। কমে আসে ছবির শুটিং। এখন সেটা একেবারেই বন্ধ।