শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা

৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার, কলেজছাত্রীসহ গ্রেফতার ছয়

হেরোইনসহ আটক চার

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরা হলেন ম্যানিলা চৌধুরী (২২), তাহের (৪৮), কুলসুম (৩২), জানে আলম (৪৫), খালেদ (৩০) আসিফ (২৪)। বৃহস্পতিবার রাতে চকবাজার, কমলাপুর ও বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। এদের মধ্যে ম্যানিলা চৌধুরী সরকারি তিতুমীর কলেজের ফিন্যান্স বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ডিবির এডিসি (পশ্চিম) মশিউর রহমান জানান, চকবাজারের নাজিমুদ্দিন রোডে হোটেল নীরবের সামনে অভিযান চালিয়ে জানে আলম ও আসিফ নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। এ সময় জানে আলমের কাছ থেকে ৫ হাজার ও আসিফের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রামপুরার বনশ্রী থেকে কুলসুমকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এডিসি মশিউর জানান, কুলসুমের তথ্যের ভিত্তিতে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ম্যানিলা, আবু তাহের ও খালেদকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ম্যানিলার কাছ থেকে ৯ হাজার, আবু তাহেরের কাছ থেকে ৫ হাজার ও খালেদের কাছ থেকে ৩ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এডিসি জানান, ম্যানিলা এর আগেও মাদক আইনে ১০ মাস জেল খেটেছেন। কারাগারে থাকার সময় মাদক পাচারকারীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। তিনি টেকনাফ ও মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে চট্টগ্রামসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। ম্যানিলা ইয়াবা সম্রাজ্ঞী হিসেবে পরিচিত। তার বাবা যাদব চৌধুরীও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাবার মাধ্যমেই এ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ম্যানিলা। এ চক্রের নেতা শাকুকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

বিদেশি নাগরিকসহ গ্রেফতার ৪ : রাজধানীর উত্তরা থেকে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাকারবারি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন নাইজেরিয়ান নাগরিক অনিকা গডসন বামালো (৩৪), আবুল কাশেম (৫২), পায়েল বেগম (২৮) ও নীলিমা লাবণ্য (২৮)। গত বুধবার উত্তরা ১০ নাম্বার সেক্টর, ৪ নাম্বার রোডের ৭ নাম্বার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম হেরোইন, ১৪৪ ক্যান বিয়ার, ২ বোতল বিদেশি মদ, ৩ হাজার ১০০ জাল ডলার ও একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব-১ সূত্র জানায়, এরা মাদক ব্যবসায়ী দলের সক্রিয় সদস্য। পায়েল ও নীলিমা দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। পায়েলের স্বামী একজন নাইজেরিয়ান। আবুল কাশেম গাড়িচালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের মাদক পরিবহনের কাজে সহায়তা করে আসছেন। চক্রটি বুধবার ডিএইচএল রামপুরা শাখার মাধ্যমে হেরোইনের একটি চালান কাপড়ের বাক্সে চীন পাঠাচ্ছিল। এমন খবরের ভিত্তিতে র্যাব তাৎক্ষণিকভাবে ডিএইচএলের ওই শাখায় ফোন করে চালানটি বন্ধ করে। পরে বাঙ্টি উদ্ধার করে তার মধ্যে ৪৩টি আন্ডারওয়্যারের প্যাকেট পাওয়া যায়। প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যেই বিশেষ প্রক্রিয়ায় হেরোইনগুলো রাখা ছিল। র‌্যাব-১ আরও জানায়, পরে আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অনিকা গডসন বামালোর উত্তরার ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও ৫৭টি অনুরূপ হেরোইনসংবলিত আন্ডারওয়্যারের প্যাকেট ও হেরোইন প্রস্তুত করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ওই বাসা থেকে ১৪৪ ক্যান বিয়ার, ২ বোতল বিদেশি মদ, ৩ হাজার ১০০ জাল ডলার ও একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব-১-এর অপারেশন অফিসার এএসপি মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, চক্রটি শুধু হেরোইন পাচারই নয় জাল ডলারের ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। অনিকা গডসন বামালো র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন চোরাকারবারি চক্রের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন নাইজেরিয়ান নাগরিক জড়িত। তাদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মোর্শেদ জানান, উদ্ধারকৃত হেরোইন আফগানিস্তান-ভারত হয়ে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা ওই হেরোইন চীন ও নাইজেরিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল।

 

 

সর্বশেষ খবর