শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা

তত্তাবধায়ক এলে আপনাকে-আমাকে জেলে যেতে হবে

প্রধানমন্ত্রী

বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আর ‘তত্তাবধায়ক’ ‘তত্তাবধায়ক’ করবেন না। আবার তত্তাবধায়ক সরকার এলে আপনাকেও জেলে নেবে, আমাকেও জেলে নেবে। আমাদের দুজনকেই জেলে যেতে হবে। এবার এলে আর ক্ষমতা ছাড়বে না। কিয়ামত পর্যন্ত থাকার ষড়যন্ত্র করবে।”
গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “বিরোধী দলের নেতা আবার সিঙ্গাপুর গেছেন। সে কারণে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা সিঙ্গাপুর থেকে এসে আবার কোন ষড়যন্ত্র করেন। আগে একবার সিঙ্গাপুর থেকে ঘুরে এসে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। শাপলা চত্বরে হেফাজতকে বসিয়ে কোরআন শরিফ পুড়িয়েছিলেন। এবার আবার ফিরে এসে কী ষড়যন্ত্র করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’’ বিএনপি জোটের আস্তিক-নাস্তিক বিতর্কের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, জেলখানায় (১/১১ সময়কালে) পাশাপাশি ছিলাম। অনেক কিছুই দেখেছি। যার সকাল হয় দুপুর ১২টায়। উনি আস্তিক। আমরা ফজরের নামাজ পড়ে,  পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করে দিন শুরু করিÑ  আমরা নাস্তিক। এটা কোন ধরনের খেলা। এ মিথ্যাচারের বিচারের ভার দেশের জনগণের ওপর ছেড়ে দিলাম
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তত্তাবধায়ক সরকার আর হবে না। বর্তমান সরকার সবকটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সক্ষম হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবেন, তারাই ক্ষমতায় আসবেন। শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীরা যেন আর দেশের ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য কাজ করতে হবে। হেফাজতের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা গুজব ছড়াচ্ছে ২৫০০ মানুষ হত্যা করা হয়েছে। তাহলে তো এক লাখ আহত হওয়ার কথা। নিহতের পরিবার কোথায়। আহতরাই বা কোথায়। গত ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, একজন মুসলমান কীভাবে কোরআন শরিফ পোড়ায়, মসজিদে আগুন দেয়। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এত কোরআন একসঙ্গে পোড়ানো হয়নি। তাদের কাছে ধর্ম হেফাজত থাকতে পারে না। আমি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে এর বিচার দিলাম। এর জবাব বিএনপিকে দিতে হবে। এ সময় হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্তদের বরাত দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, হেফাজতের তাণ্ডবে জামায়াত-শিবিরের লোকজন জড়িত ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর এলাকার এক ইমাম আরও কয়েকজন ইমামকে নিয়ে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণ করেছে। এ সময় তিনি তার পরিবারের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে বলেন, এসব মিথ্যাচারের বিচার জনগণ করবে। বিরোধীদলীয় নেতার পরিবারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চা বাগানের শিলিগুড়িতে যার জন্ম, তিনি আমার পরিবার নিয়ে কথা বলেন। বিরোধীদলীয় নেতা ভাঙা সুটকেস থেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনার ছেলেরা ১৫টি ইন্ডাস্ট্রির মালিক।’
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবদুল মতিন খসরু, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এ কে এম রহমতউল্লাহ, সিমিন হোসেন রিমি, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাওলানা গোলাম মাওলা, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া প্রমুখ। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ১৪ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর