ভারতের ত্রিপুরার পালাটানা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭২৬ মেগাওয়াটের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রণব মুখার্জি। গতকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ভারত-বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতি এবং তাপবিদ্যুৎ ক্ষেত্রে আত্দনির্ভরশীল হওয়ার জন্য দুই প্রতিবেশী দেশই একে অপরকে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার ত্রিপুরার পালাটানা গ্যাসভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যা মেটাতে ভারত সব সময় সচেষ্ট। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারত এই গ্যাসভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পটি গড়ে তুলেছে। উল্লেখ্য, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল উৎপাদনকারী সংস্থা অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কমিশনের (ওএনজিসি) উদ্যোগে দক্ষিণ ত্রিপুরার পালাটানায় তৈরি এটিই হলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গ্যাসভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাষ্ট্রপতি জানান, ভারতে এখনো ৩০ কোটি মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। আগামী পাঁচ বছরে এ কেন্দ্র থেকে দেশে অতিরিক্ত ৮৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে এই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি হওয়ার ফলে উত্তর ভারতের সাতটি রাজ্যের বিদ্যুৎ সমস্যা মিটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মাত্র ১০ মিনিটের ভাষণে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ভূমিকার উল্লেখযোগ্য প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সহযোগিতা ছাড়া এত বড় প্রকল্প গড়ে ওঠা কোনোমতেই সম্ভব ছিল না। কারণ বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করেই ভারতের অন্য অংশ থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিতে ভারী ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ত্রিপুরায় এসে পেঁৗছায়। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনুমতি না দিলে এ প্রকল্পের কাজ কোনোমতেই সম্ভব হতো না। এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রী এম. বীরাপ্পামইলি, ওই দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী পানাবাকা লক্ষ্মী, ত্রিপুরার রাজ্যপাল দেবানন্দ কুঁয়োর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, ওএনজিসির চেয়ারম্যান সুধীর বাসুদেবা, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশানার তারেক এ করিমসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে এই পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। পালটানা প্রকল্পে ত্রিপুরা রাজ্যের প্রথম কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, যার ফলে প্রাকৃতিক গ্যাস দহন করে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ তৈরির সময় সৃষ্ট তাপ থেকে ব্রয়লারের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প তৈরি হয়ে আরও বিদ্যুৎ তৈরি হবে। ফলে ওপেন সাইকেলের তুলনায় দেড় গুণ বা তার কিছু বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে পরিব্যায়ের সাশ্রয় হবে।-কূটনৈতিক প্রতিবেদক