রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

প্রটোকল জটিলতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারির পদমর্যাদা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বা অন্য সচিবদের সমমান। সে হিসেবে গত মাসে দুই দেশের অংশীদারিত্ব সংলাপের পর একটি 'স্মারক' স্বাক্ষরে আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যান ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব সিকিউকে মুসতাকের স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তখন শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কিছু সংশোধনীর দাবি থাকায় 'স্মারক'টি আর স্বাক্ষর হয়নি। সেই সংশোধনীর পর সেটি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সচিবের বিপরীতে চুক্তিটি স্বাক্ষর করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। নিম্ন পদমর্যাদার ওয়েন্ডি শ্যারমেনসহ আরও কয়েকজন নিম্ন পদস্থ মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বাংলাদেশের 'মন্ত্রী'র ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার সূচিও নির্ধারণ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তার সমমর্যাদার কারও সঙ্গে বৈঠকসূচি নির্ধারণ করা হয়নি। 'প্রটোকল' না মানার এই কাজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানোই হয়নি। যুক্ত করা হয়নি ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসকেও। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে বিষয়টি জানতে পেরে অস্বস্তি বোধ করা পররাষ্ট্র দফতর সংশ্লিষ্ট দফতরে নিজেদের আপত্তি (রিজার্ভেশন) জানিয়েছে। কারণ এখন বাংলাদেশের মন্ত্রী যদি নিম্ন পদস্থদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অন্য কোনো মন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী পদমর্যাদার সঙ্গে বৈঠকের সূচি পাবেন না। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, আগামী ১১-১২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে 'আনুষ্ঠানিক' সফর করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ব্যক্তিগত কাজে (ছেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ)-এর আগেই বোস্টন পেঁৗছবেন। দুই দিনের সরকারি সফরে তিনি দুটি স্মারক স্বাক্ষর করবেন। একটি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ দমন বিষয়ক ইন্সট্রুমেন্ট। অপরটি মাদক চোরাচালান প্রতিরোধবিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)। সফলকালীন তিনি মার্কিন রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যান, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও'ব্লেক, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সন্ত্রাসবাদ দমন ব্যুরোর অস্থায়ী সমন্বয়কারী জেরি পি লেনিয়ার এবং মার্কিন আইন দফতরের মাদক নিয়ন্ত্রণ প্রশাসনের প্রধান জেমস এল ক্যাপরারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া অপরাধ দমনবিষয়ক একটি যৌথ সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ নেবেন। ওই সভায় অন্যদের মধ্যে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর (এফবিআই) উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রুস সোয়ার্টজ ও মার্কিন আইন দফতরের আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত প্রশিক্ষণ সহায়তা কর্মসূচির পরিচালক কার ট্রেভেলিয়ান। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এফবিআইয়ের পরিচালক রবার্ট মুলারের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারে। এটি না হলে তিনি এফবিআইর ডেপুটি পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফর সম্পর্কে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে সফরসূচি যোগাড় করে দেখা যায় তার কর্মসূচিগুলো মন্ত্রীর পদমর্যাদার সঙ্গে মানানসই নয়।

সর্বশেষ খবর