রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

মঞ্জুকে পাশে চান এরশাদ

মঞ্জুকে পাশে চান এরশাদ

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ফের পাশে চান তার রাজনীতির দুঃসময়ের কাণ্ডারি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে। ৯০-এর গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক সেনাশাসক এরশাদের গুডমিনিস্টার ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ’৯১ সালের নির্বাচনে রংপুরের পাঁচটি আসনে বিজয়ী হলেও এবং কঠিন পরিস্থিতির মুখে জাপা ৩৫টি আসন দখল করলেও খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের শাসনামলের পুরো সময় এরশাদ ছিলেন কারাগারে। সেই নির্বাচনে বিজয়ী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে কারাগারে বসেই এরশাদ পার্টির মহাসচিব নিযুক্ত করেন। সেই সময়ে এরশাদ তাকে জুলিয়াস সিজারের মতো ভূমিকা নিয়ে জেল থেকে মুক্ত করতে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে চিরকুট দিতেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন মরহুম মিজানুর রহমান চৌধুরী। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পার্টির মহাসচিব হিসেবে পার্টির নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলনে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেন। তিনি জেল খাটেন ও রাজপথে বোমার আঘাতে আহত হন। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সেই সরকারের মন্ত্রী হন এবং এরশাদ বিএনপি জমানায় দায়ের করা নানা মামলায় ছয় বছর জেল খেটে মুক্ত হয়ে সংসদে আসেন। পরবর্তীতে এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার বিরোধী চারদলীয় জোটের ঐক্যের কাবিননামায় সই করে আন্দোলনে নামতে গেলে জাতীয় পার্টি বিভক্ত হয়। ১২ জন সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে যোগ দেন। মঞ্জুর মামলায় এরশাদ ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারান। নির্বাচন কমিশন লাঙ্গল এরশাদকে দিলেও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পার্টিকে জেপি ও এরশাদের পার্টিকে জাতীয় পার্টি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিভিন্ন সময়ে এরশাদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিলেও তা কার্যকর হয়নি। কিছুদিন আগে কুতুববাগ দরবার শরিফের পীরের বাড়িতে এরশাদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু রাতের খাবার খেতে খেতে রাজনীতির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গল্প করেন। নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ করতে পীরের দাওয়াত ভূমিকা রাখে। সম্প্রতি পীরের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার কথা থাকলেও তা হয়ে ওঠেনি। তবে এরশাদের আমন্ত্রণে তার এককালের পার্টি মহাসচিব ও মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কয়েকদিন আগে বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের ফ্লাটে এসেছিলেন। গল্পের ছলে এরশাদ এই সময়ে আগামী নির্বাচনে ফলাফল অনুকূলে আনতে মঞ্জুকে তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন। জবাবে স্বভাবসুলভ হেয়ালীতে মঞ্জু বলেছেন জাতীয় পার্টি তো ভাগ হয়নি। বাংলায় জাতীয় পার্টি ইংরেজিতে জেপি। বিষয় তো একই। এরশাদ তবুও তাকে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধে তো আলাদা। হরেক কথার শেষে মঞ্জু এরশাদকে বলেছেন, আমরা তো কাছাকাছিই আছি। নির্বাচন আসুক, তখন না হয় পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর