রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

বিএনপির ইফতারে গেল না আওয়ামী লীগ

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইফতার পার্টিতে যোগ দেয়নি। গতকাল রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার এলডি-২ হলে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন বেগম জিয়া। বিকাল সোয়া ৬টায় ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হন তিনি। ১৮ দলীয় জোটের নেতারা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডির নেতারা ইফতারে অংশ নেন। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন বেগম জিয়া। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা ও মোস্তফা জামাল হায়দারসহ ১৫ জন সিনিয়র নেতা ইফতার পার্টিতে অংশ নেন। কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবও এতে অংশ নেন। এ ছাড়া বিএনপি সমর্থিত সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত পাঁচ মেয়রও ইফতার মাহফিলে যোগ দেন। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গণি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনালেন (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মইন খান, মির্জা আব্বাসসহ দল ও এর অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা এতে অংশ নেন।  ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির নাজির আহমেদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিম, খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বাচ্চু, ন্যাপের সভাপতি  জেবেল রহমান গানি, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজার রহমান ইরান প্রমুখ।  ইফতারের পর সাংবাদিকদের কাছে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। যারা এসেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আসার কথায় আমরা উৎসাহী ও অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য তারা আসেনি।’ জামায়াত নেতাদের দাওয়াত দেওয়ায় আওয়ামী লীগ আসেনি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, ‘এটা কোনো অজুহাত নয়। তারা (আওয়ামী লীগ) অনেকবার জামায়াতের সঙ্গে বসেছে। এখন তারা বলছে, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। এটা আসলে আওয়ামী লীগের পুরনো চরিত্র।’ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইফতারে দাওয়াত দেওয়া হলে তা বিবেচনা করা হবে বলেও জানান বিএনপির মুখপাত্র। বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ইফতারে না যাওয়ায় একটি সমঝোতার সুযোগ হারিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে জোটে তার দল যাচ্ছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর জোট হলে ক্ষতি  কোথায়?’ আওয়ামী লীগের যোগ না দেওয়াকে ‘দুঃখজনক’ মন্তব্য করে কাজী জাফর আহমদ বলেন, এটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে আওয়ামী লীগের অংশ না নেওয়া দুঃখজনক ব্যাপার। তারা আসলে রাজনীতিবিদদের একটি মিলনমেলা সৃষ্টি হতো। আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণের ভাষা বুঝুন। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করুন। দেশব্যাপী আন্দোলন ও পরিবর্তনের যে হাওয়া বইছে তাকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে হবে। ১৮ দলীয় জোটে যাবেন কি না তা সময়ে দেখা যাবে। কাদের সিদ্দিকী বলেন, ঈদের পরে কোনো দলীয় জোট নয়, জনতার জোট হবে।

সর্বশেষ খবর