রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

পরীক্ষার সময় সহিংসতায় শিক্ষার্থী অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন

আগামীকাল সোমবার রয়েছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের 'ও' লেভেল পরীক্ষা। ৪ নভেম্বর থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে জেএসসি পরীক্ষা। ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সর্ববৃহৎ পাবলিক পরীক্ষা বলে খ্যাত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষা। এ ছাড়াও নভেম্বরের প্রথম দিনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সারা দেশের উচ্চশিক্ষায় ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এসব পরীক্ষায় অংশ নেবে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী।

তাই বছরের শেষ দুই মাস অর্থাৎ পরীক্ষার সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশ বিরাজ করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পরীক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা শুরুর আগেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হরতালের ঘোষণাসহ লাগাতার ধ্বংসাত্দক কর্মসূচির হুমকিতে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষার লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ধ্বংসাত্দক কর্মসূচি পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী মাসেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষায় বাধা সৃষ্টি করা কোনো রাজনৈতিক আদর্শ নয়। দয়া করে চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। অন্যদিকে ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিলের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা গেছে, 'ও' এবং 'এ' লেভেল পরীক্ষাগুলো সারা পৃথিবীতে একই সময়সূচি অনুযায়ী হয়। এ দেশে হরতালের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে সময়মতো পরীক্ষাগুলো নেওয়া যেমন কঠিন হয়ে পড়েছে তেমনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিষয়টি নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়াও রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে 'ও' এবং 'এ' লেভেলের পরীক্ষা ব্যাহত হওয়ায় ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশে আর পরীক্ষাগুলো না নেওয়ার কথা ভাবছে। সে ক্ষেত্রে এ দেশের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে পাশের দেশ ভারতে গিয়ে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, দেশের রাজনীতিবিদরা ভুলে গেছেন পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নতুন প্রজন্মের লাখ লাখ পরীক্ষার্থী কোনো দলের সন্তান নয়, এরা পুরো জাতির সন্তান। পরীক্ষার সময় হরতালসহ ধ্বংসাত্দক কর্মসূচি ডাকা যুক্তিহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অবিবেচকের কাজ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান দেশব্যাপী কলেজগুলোর লাখ লাখ শিক্ষার্থীর সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজ রবিবার অনার্স প্রথম পর্বের পরীক্ষা হরতালের কারনে পেছানো হয়েছে। এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিক্ষাব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে এসেছিল। তখন চরম সংকটের মুখে পড়ে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বিপদে পড়েছিল উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী। হরতালের কারণে আট দিনের পরীক্ষা পেছানো হয়। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে হরতালের কারণে ছয় দিনের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা পেছানো হয়। যাতে পিছিয়ে যায় ফল প্রকাশের কার্যক্রমও। কেবল তাই নয়, চলতি বছরের এইচএসসিতে লাগাতার পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় ফল অন্যান্য বছরের তুলনায় খারাপ হয় বলেও দাবি করেন শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর