সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

এমন নৃশংসতা আর দেখিনি

এমন নৃশংসতা আর দেখিনি

শনিবার বিকালের ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে নীলফামারী সদর থানায় মামলা করেছে পুলিশ। ঘটনার রাতেই নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (তদন্ত) বাবুল আকতার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সহিংসতার পর রাতে অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের আবদুল ওহায়েদ (৩২), মোকলেছুর রহমান (৪২) ও হাসান আলী মিয়া (৬৫) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নীলফামারী শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নীলফামারী সদর থানার ওসি আবু আক্কাস আহমেদ জানান, শনিবার বিকালে সদর উপজেলার রামগঞ্জে ভাঙচুর, অগি্নসংযোগ, সরকারি কাজে বাধাদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে আরও দেড় হাজার ব্যক্তিকে আসামি রাখা হয়েছে। এদিকে শনিবারের ঘটনাটিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পুনরাবৃত্তি বলে মন্তব্য করেছেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। তিনি গতকাল দুপুরে শহরের ফুড অফিস সড়কে অবস্থিত তার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। এমপি নূর বলেন, একাত্তরের পর এমন নৃশংসতা আর দেখিনি। যুদ্ধাপরাধ মামলায় কাদেও মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর নীলফামারীর লক্ষ্মীচাপে জামায়াত-শিবির সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন শুরু করে। তাদের নির্যাতনে নারীরা বাড়িতে রাত্রিযাপনও করতে পারছে না। জামায়াত-শিবিরের এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এমপি নূর। প্রসঙ্গত শনিবার বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার রামগঞ্জ ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকায় আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে জামায়াত-শিবির হামলা চালালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। জামায়াত-শিবিরের হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এএসসি সার্কেল, ওসিসহ আওয়ামী লীগের অন্তত ৩০ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় সেখানে থাকা প্রশাসনের গাড়িগুলো। পুলিশ ১৪১ রাউন্ড টিয়ার শেল, ৩৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ঘটনাস্থলে জামায়াত- শিবিরের হামলায় কৃষক লীগ নেতা খোরশেদুল আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা লেবু মিয়া, যুবলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন ও ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হোসেন নিহত হন। এ ছাড়াও ঘটনাস্থলে আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক পথচারী গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। তবে নিহত পথচারী সিদ্দিককে বিএনপি এবং জামায়াত নিজেদের কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন। এদিকে নিহত সিদ্দিকের নামাজে জানাজা শেষে গতকাল বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান। সংঘর্ষে প্রত্যক্ষদর্শী রিপন কুমার মজুমদার জানান, জামায়াত-শিবির এমপি নূরের গাড়িবহরে থাকা অন্তত ৩৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। নীলফামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু আক্কাছ আহমেদ মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে বলেন বিজিবির সহায়তায় তিন জামায়াত-শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর