শনিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

নতুন বাদশাহর বর্ণাঢ্য জীবন

নতুন বাদশাহর বর্ণাঢ্য জীবন
সৌদি আরবের নতুন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। তার রাজনৈতিক জীবনের বর্ণাঢ্য অর্জন ঘাঁটলে খুব সহজেই বলা যায় সৌদির নতুন নেতৃত্বে তিনি হবেন যোগ্য উত্তরসূরি। আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠা আল সৌদ এর যৌগ্য পুত্র সালমান। ১৯৩৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন এই বাদশা। পরিবারের সঙ্গে তার শৈশব কাটে রিয়াদের ‘মুরব্বা প্যালেস’-এ। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হতে থাকে। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু থেকে প্রতিটি ধাপেই তিনি যোগ্যতার ছাপ রেখে চলেছেন। মূলত ১৯৫০ এর দশক থেকে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। সে সময় তিনি তৎকালীন সৌদি বাদশাহর দূত হিসেবে সর্ব প্রথম তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এর কিছুদিন পরই তিনি রিয়াদ প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। গত ৪৮ বছর ধরে ১৯৬৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে রিয়াদের উন্নয়নে তিনি ব্যাপক অবদান রাখেন। মূলত রিয়াদকে একটি মাঝারি আকৃতির শহর থেকে আজকের আধুনিক মহানগরীতে পরিণত করেন। এর মাধ্যমে তিনি সৌদি আরবকে পর্যটন খাতে কেবল আকর্ষণীয় করেই তোলেননি- বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। সবচেয়ে বড় কথা নতুন এই বাদশা তার চৌকস রাজনৈতিক বুদ্ধি দিয়ে রাজধানীর গভর্নর থাকা অবস্থায় ভৌগলিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে পশ্চিমাদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হন। প্রায় ৪৮ বছর গভর্নর থাকার পর ২০১১ সালে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল-এনএসসি) এর সদস্য ছিলেন। বলা হয় তার কূটনৈতিক দক্ষতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের কারণে তিনি প্রতিরক্ষা সেক্টরে সুনাম অর্জন করেন। খুব অল্প সময়ে সালমান আন্তর্জাতিক অজ্ঞনে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। এরই মধ্যে ২০১২ সালের এপ্রিলে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এরপর তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর ২০১২ সালের ১৮ জুন তিনি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। পর্যটন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের কারণে তুরাথ চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে তিনি ২০১৩ সালে ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন। বলা হয় সালমান হলেন ‘সুদাইরি সেভেন’-এর অন্যতম। অর্থাৎ তার পিতা বাদশাহ আল সৌদের সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী হুসসা বিনতে আহমেদ সুদাইরির সাত সন্তানের একজন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর বর্তমানে তার দুই স্ত্রী রয়েছেন। সন্তানরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন। রাজনৈতিক সংস্কার ও সামাজিক পরিবর্তন আনায়নে তিনি রক্ষণশীলতায় বিশ্বাস করেন।

সর্বশেষ খবর