রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের জন্য হুমকি মনে করছে বিশ্ব, বিচার দাবি

লেখক ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশি জাতিসত্তার ওপর মৌলবাদীদের আক্রমণ হিসেবে দেখছে বিশ্ব। বড় ধরনের সন্ত্রাসবাদী হুমকি হিসেবে এই হামলাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্র। ঢাকায় দায়িত্বরত বিদেশি কূটনীতিকরা নিজ নিজ সদর দফতরগুলোর নির্দেশে তদন্ত প্রক্রিয়া ও ঘটনাপ্রবাহের দিকে কড়া নজর রাখছে। পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবিরোধী দুই সংস্থাও।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক জানিয়েছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে এ হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত দুর্বৃত্তদের বিচারের আওতায় আনার আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে সুশীল সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টিকেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র জেন সাকি এই হত্যাকাণ্ডকে কাপুরুষোচিত এবং নৃশংস উল্লেখ করে বলেছেন, অভিজিৎ ছিলেন একজন লেখক, একজন মানবতাবাদী, একজন স্বামী ও একজন বন্ধু এবং আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তাকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও ধর্ম নিরপেক্ষতার সার্বজনীন নীতি, যা বাংলাদেশের সংবিধানে সুরক্ষিত ও দেশটির ঐতিহ্য- তার ওপর কাপুরুষোচিত হামলা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ঢাকার প্রতিনিধি দলের প্রধান পিয়েরে মায়েদুনও হত্যাকাণ্ডকে নৃশংস উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত মায়েদুন বলেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য আবশ্যিক উপাদান। এটি নিশ্চিত করতে ইইউ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। গতকাল আলাপকালে পশ্চিমা একটি দেশের কূটনীতিক বলেন, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা ধারণা করা হচ্ছে। এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা তদন্ত প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছি। তদন্তে জঙ্গিবাদী সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে সেটিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের অংশ হিসেবেই চিহ্নিত করা হবে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য নয়, বরং আঞ্চলিকভাবেই বিশেষ হুমকি। তাই এ ক্ষেত্রে সরকারকে যে কোনো ধরনের সহায়তা করতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর