মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

হঠাৎ বেপরোয়া শিবির

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও হরতালে আবারও রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। চলমান কর্মসূচিতে গত সপ্তাহে শিবিরের নাশকতার মাত্রা কিছুটা কম হলেও চলতি সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে একই সময়ে তারা গাড়ি ভাঙচুর, আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মেতেছে। এতে বেশ কয়েকজন ধরাও পড়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যে গোয়েন্দা ও পুলিশ শিবিরের বেপরোয়া হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা গেছে, রাজধানীতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য রাজধানীর মধ্যে ও আশপাশে এখন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিবির কর্মী অবস্থান করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের এনেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। রাজধানীতে জামায়াতের ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিশ্বস্ত নেতাদের আশ্রয়ে আছেন তারা। তাদের মাধ্যমেই বড় ধরনের নাশকতা করার পরিকল্পনা আছে সংগঠনটির। এরই মধ্যে গত তিন দিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে শাহবাগ, মতিঝিল, পরীবাগ, বাংলামোটর, বাড্ডা, পুরান ঢাকা, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, ধানমন্ডি, কাকরাইল, পল্টন, মগবাজারসহ কয়েকটি স্থানে নাশকতা চালানো হয়েছে। পুলিশ ও জনগণ কয়েকজন নাশকতাকারীকে ধরেও ফেলেছে। আটকদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৫ জন করে একেকটি দল গঠন করা হয়েছে। নাশকতা বাস্তবায়নে নানা ধরনের কৌশল গ্রহণ করেছে সংগঠনটি। গ্রেফতার এড়াতে পোশাকে পরিবর্তন এনেছেন ক্যাডাররা। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে হামলার স্থান নির্ধারণ করেন তারা। স্থান নির্ধারণ হয়ে গেলে একসঙ্গে না এসে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে একে একে এসে জড় হতে শুরু করেন। কাস্টমার সেজে একেক দোকানের সামনে অবস্থান নেন। সিগন্যাল মিললেই মুহূর্তের মধ্যে এক জোট হয়ে হামলা চালিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। শিবিরের একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে ছাত্রশিবির গেরিলা হামলা ছাড়া কোনো বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে না। তারা জানিয়েছেন, এবার রাজধানীতে দীর্ঘমেয়াদে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নতুন ছক কষেছেন। তাদের দাবি, সরকার টিকে গেলে তাদের বাঁচার পথ থাকবে না। এমনিতেই গত ছয় বছরের মামলা-হামলায় তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংগঠন। জেল খাটতে খাটতে অনেক নেতা-কর্মীর মনোবল ভেঙে গেছে। জানা যায়, ৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীতে ১৮০টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ২০টি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় নাশকতায় জড়িত থাকার আলামতসহ প্রায় আড়াইশ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, যাদের মধ্যে ১৫০ জনই জামায়াত-শিবিরের কর্মী।

সর্বশেষ খবর