বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ কোথায়- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাঁচ সংস্থার কেউই এখনো জানে না। কোথাও তাকে খুঁজে পায়নি তারা। হাইকোর্টের রুলের জবাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ সংস্থার প্রতিবেদনে এ বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, তাকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টায় রয়েছে পুলিশ। পাঁচ সংস্থার এই প্রতিবেদন গতকাল আদালতে দাখিল করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রতিবেদন দাখিলের মধ্য দিয়ে এটিও নিশ্চিত করা হলো যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সংস্থা গ্রেফতার বা আটক করেনি বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে। আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের পর অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, প্রতিবেদন দাখিলকারী পাঁচটি বাহিনী হচ্ছে পুলিশ, ডিবি, এসবি, র্যাব ও সিআইডি। এগুলোর মধ্যে সালাহউদ্দিন আহমেদের খোঁজ পেতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রুলের আবেদনকারী বাদীপক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এ প্রতিবেদনগুলো আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা এসব প্রতিবেদনের জবাব দেব। পরিবারের অভিযোগ, গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি স্বীকার করেনি। এই প্রেক্ষাপটে সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ স্বামীর খোঁজ চেয়ে হাইকোর্টে গেলে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার একটি রুল জারি করেন। সালাহউদ্দিনকে কেন খুঁজে বের করে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হবে না- সরকারকে তা রবিবারের মধ্যে জানাতে বলা হয়। সে অনুযায়ী বিভিন্ন বাহিনীর পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতরে জমা দেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালত রুল জারির আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সালাহউদ্দিনকে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছিল। ‘রুল জারির পর তিনি (সালাহউদ্দিন) কোথায় আছেন তা জানার জন্য কার্যক্রম অব্যাহত আছে।’ রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিক থেকে সালাহউদ্দিনের নামেই গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে হরতালের বার্তা দেওয়া হচ্ছিল। তবে নিজের অবস্থান প্রকাশ করছিলেন না এই রাজনীতিক। সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের অভিযোগ, তিনি স্বামীর খোঁজ চেয়ে গুলশান থানা ও উত্তরা থানায় জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি। এদিকে পুলিশ ও গোয়েন্দারা জানান, সালাহউদ্দিন আহমেদের খোঁজে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালানো হচ্ছে। তিনি কি আত্মগোপনে রয়েছেন, নাকি স্বার্থান্বেষী মহল তাকে তুলে নিয়ে গেছে, তা তদন্ত করে দেখছেন তারা।
নাটোরে মিছিল-সমাবেশ : আমাদের নাটোর প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী ২০-দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধ ও হরতালের সমর্থনে এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধান দাবিতে নাটোরে জেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। রবিবার বিএনপি অফিসের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের হাফরাস্তা এলাকা হয়ে বিএনপি অফিসের সামনে এসে এক সমাবেশে মিলিত হয়। নাটোর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন নাটোর জেলা ২০-দলীয় জোটের আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক।