বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
শিশু রাজন হত্যা

খুনি ধরতে মাঠে নেমেছে জনতা!

নির্মম নির্যাতনে খুন হওয়া শিশু সামিউল আলম রাজনের খুনিদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে প্রতিবাদমুখর জনতা। খুনিদের ধরতে তারাই অভিযান চালাচ্ছেন। গতকাল অন্যতম অভিযুক্ত দুলাল, ভিডিও ধারণকারী নূর মিয়া ও মঙ্গলবার রাতে ময়না চৌকিদারকে আটক করে পুলিশে দেয় জনতা। এদিকে, নিহত রাজনের পিতার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও খুনিদের সহযোগিতার অভিযোগে জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার তদন্ত গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানান্তরেরও উদ্যোগ  নেওয়া হয়েছে। গতকাল হত্যাকাণ্ডস্থল পরিদর্শন ও তার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিতে এসে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, সারা দেশে শিশু নির্যাতন ও হত্যার বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। জানা গেছে, গতকাল দুপুরে কুমারগাঁও শেখপাড়া থেকে দুলাল মিয়া নামের এক আসামিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। সে গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। নির্যাতনের ভিডিও চিত্রে দুলালকে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। গ্রেফতারের পর দুলাল সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া মঙ্গলবার রাতে টুকেরবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় এজাহারনামীয় আসামি ময়না চৌকিদার। গতকাল তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন। মহানগর হাকিম ১ম আদালতের বিচারক শাহেদুল করিম তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে জালালাবাদ থানায় ময়না চৌকিদার ছাড়াও লাশ গুমের চেষ্টার সময় আটক মুহিত ও মুহিতের বিয়াই ইসমাইল রিমান্ডে রয়েছেন। এ পর্যন্ত রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৮ জন গ্রেফতার হয়েছে। এরা হলো- কামরুল ইসলাম, মুহিত আলম ও তাদের বিয়াই ইসমাইল হোসেন আবলুস, ময়না চৌকিদার ওরফে বড় ময়না, মুহিতের স্ত্রী লিপি  বেগম, দুলাল মিয়া ও প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলী। এর মধ্যে কামরুলকে সৌদি আরবে আটক করা হয়। আসামিদের মধ্যে কামরুলের ভাই আলী হায়দার ওরফে আলী পলাতক রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, ময়না চৌকিদার ও দুলালকে আটকের সময় তাদের পরিবারের সদস্যরা সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগমও তার স্বামী দোষী হলে শাস্তি দাবি করেছেন। এদিকে, রাজন হত্যাকাণ্ডের পর তার পিতা আজিজুর রহমানের মামলা নিতে গড়িমসি, তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও খুনিদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের রক্ষা করার চেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত এসআই আমিনুল ও ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে মহানগর পুলিশ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গতকাল আদালত মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই সকালে চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের রাজনকে। নির্যাতনকারীদের একজন শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

সর্বশেষ খবর