বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভিনদেশে সালাহউদ্দিনের একাকী ঈদ

ভিনদেশে সালাহউদ্দিনের একাকী ঈদ

স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও নেতা-কর্মী ছাড়াই ভিন দেশে একাকী ঈদ উদযাপন করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হওয়া সালাহউদ্দিন এখন আদালতের নির্দেশে ভারতের শিলংয়ের একটি ভাড়া বাসায় অনেকটা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছেন। মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে দেখা করতে যান দেশের আত্মীয়স্বজনরা। এবাদত-বন্দেগির মাধ্যমেই তিনি রমজান মাস অতিবাহিত করছেন বলে শিলং-এ অবস্থানরত সালাহউদ্দিনের একাধিক ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন। প্রায় দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর গত ১১ মে ভারতের শিলং-এর গলফলিংক রোড থেকে আটক হন সালাহউদ্দিন। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় সেখানকার হাসপাতালে। স্বামীকে উদ্ধারের খবর পেয়ে ১৭ মে শিলং ছুটে যান হাসিনা আহমেদ। স্বামীর চিকিৎসা তদারকির পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের ব্যবস্থা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৩ জুন। এরপর থেকে একা হয়ে পড়েন সালাহউদ্দিন। কলকাতার অধিবাসী সালাহউদ্দিনের আত্মীয় আইয়ূব আলী জানান, শিলং ত্যাগে আদালতের অনুমতি না থাকায় সালাহউদ্দিন দেশ তো দূরের কথা ভারতের অন্য কোথাও যেতে পারছেন না। সেখানকার গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তার ভাড়া বাসায় যাতায়াতকারী লোকজনের উপরও নজরদারি রাখছে। বর্তমানে তিনি শিলং-এ তিন বেড, এক ড্রয়িং ও এক ডাইনিং রুমের ডুপ্লেক্স ভাড়া বাড়িতে থাকছেন। প্রতি সপ্তাহে তিনি পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়ে হাজিরাও দিচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটা ভালো। সালাহউদ্দিনকে সেখানে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিচ্ছেন তার ভাতিজা সাফওয়ানুল করিম।
সূত্র জানায়, সালাহউদ্দিন ভাড়া বাসায় ওঠার পর দেশ থেকে অনেক নেতা-কর্মী তার সঙ্গে দেখা করতে যান। আত্মীয়-স্বজনরাও পালাক্রমে শিলং গিয়ে তাকে সময় দেন। কিন্তু রমজানে নেতা-কর্মীদের যাতায়াত কমে যায়। ঈদের আগে আত্মীয়-স্বজনদের যারা শিলং বেড়াতে গিয়েছিলেন তাদেরও অনেকে দেশে ফিরে আসছেন। তাই শুধু ভাতিজা সাফওয়ানকে নিয়েই ঈদ করতে হচ্ছে সালাহউদ্দিনকে। প্রসঙ্গত, ১০ মার্চ ঢাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হন সালাহউদ্দিন। নিখোঁজের প্রায় দুই মাস পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের গলফ লিংক রোড থেকে তাকে আটক করে সেখানকার পুলিশ। প্রথমে মানসিক রোগী ভেবে পুলিশ তাকে শিলং-এর মিমহ্যান্স মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। তার পরিচয় জানার পর তাকে পরদিন শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০ মে তাকে শিলং-এর নেগ্রিমস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৬ মে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে ২৭ মে তাকে তোলা হয় আদালতে। শিলং আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালাহউদ্দিনকে ১৪ দিন বিচারিক হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ওই রাতেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন তাকে আবারও নেগ্রিমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩ জুন আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ৫ জুন শিলং-এর নিম্ন আদালতের বিচারক ভি মৌরি শর্ত সাপেক্ষে সালাহউদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করেন। ৮ জুন তিনি হাসপাতাল থেকে ভাড়া বাসায় ওঠেন। ১০ জুন মামলার ধার্য তারিখে সালাহউদ্দিনের জামিন বহাল রাখেন আদালত। -শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সর্বশেষ খবর