শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভয়ঙ্কর যত অপরাধ

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২৩ অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিচার হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে প্রমাণিত নয়টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত হন তিনি। বিচারিক আদালতে দণ্ডিত নয়টির মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয় আপিল বিভাগে। এর মধ্যে তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড; দ্বিতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে ২০ বছর করে এবং সপ্তদশ ও অষ্টাদশ অভিযোগে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। দ্বিতীয় অভিযোগ- ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সাকা চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের গহিরা গ্রামের হিন্দু অধ্যুষিত পাড়ায় সশস্ত্র অভিযান চালায় দখলদার পাকিস্তানি সেনারা। এদিন পাকিস্তানি সেনারা হিন্দুদের ব্রাশফায়ারে হত্যা করে আসামির উপস্থিতিতে। তৃতীয় অভিযোগ- ১৩ এপ্রিল সাকা চৌধুরীর নির্দেশে পাকিস্তানি সেনারা ব্রাশফায়ার করে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহকে। পরে গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আসামি। চতুর্থ অভিযোগ- ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সহযোগীসহ পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত জগৎমল্লপাড়ায় সশস্ত্র অভিযান চালান সাকা চৌধুরী। পরে তার উপস্থিতিতে এলাকাবাসীর ওপর গুলিবর্ষণে মারা যায় ৩২ জন। পঞ্চম অভিযোগ- ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে হামলা চালান সাকা চৌধুরী। পরে বণিকপাড়ায় অভিযান চালিয়ে নেপাল চন্দ্র ধর, মনীন্দ্র লাল ধর ও উপেন্দ্র লাল ধরকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। আহত করে আরও একজনকে। ষষ্ঠ অভিযোগ- ১৩ এপ্রিল হিন্দু জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় সশস্ত্র অভিযান চালান সাকা চৌধুরী। ওই পাড়ায় তার উপস্থিতিতে হিন্দু নর-নারীকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। অষ্টম অভিযোগ- ১৭ এপ্রিল পুত্র শেখ আলমগীরসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে প্রাইভেটকারে রাউজান থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহমদ। পথে সাকা চৌধুরীর সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি সেনারা গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায় মোজাফফর আহমদ ও তার ছেলেকে। পরে আর উদ্ধার করা যায়নি শেখ মোজাফফর আহমদ ও শেখ আলমগীরকে। সপ্তদশ অভিযোগ- ৫ জুলাই দু-তিনজন সহযোগীসহ সাকা চৌধুরী এবং পাকিস্তানি সেনারা চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার হাজারী লেনের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পোড়োবাড়ি থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সিরাজ ও ওয়াহেদ ওরফে ঝুনুকে অপহরণ করে নিয়ে যায় গুডসহিলে। যে অভিযোগে খালাস : সাকা চৌধুরীকে সপ্তম অভিযোগে খালাস দেন আপিল বিভাগ। প্রসিকিউশনের আনা এই অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এই অভিযোগ অনুসারে, ১৪ এপ্রিল সাকা চৌধুরীর নেতৃত্বে রাউজান পৌরসভা এলাকার সতীশ চন্দ্র পালিতের বাড়িতে প্রবেশ করে একদল পাকিস্তানি সেনা। পরে সেনারা গুলি করে হত্যা করে সতীশকে।

সর্বশেষ খবর