বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে উল্লাস মিষ্টি বিতরণ

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় সন্তোষ ও উল্লাস প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল বিকালে ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে দলের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এর মধ্য দিয়ে দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশবাসী দীর্ঘকাল এ রায়ের জন্য অপেক্ষা করেছিল। রায়ের ব্যাপারে বিএনপি নেতা জমিরউদ্দিন সরকারের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে নানক বলেন, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য তাদের অভয় আশ্রয়স্থল জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই ছিল। এ প্রক্রিয়ায় তারা যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের দলে আশ্রয় দিয়েছিল। এ কারণেই তারা মুক্তিযুদ্ধ প্রিয় জনগণ থেকে আগেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, খালেদা-তারেক, বিএনপি-জামায়াত, শিবির যতই সহিংসতা, নাশকতা, ষড়যন্ত্র, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাক না কেন, মানবতাবিরোধীদের বিচার বাংলার মাটিতে সম্পন্ন হবে।
সাকার জন্মস্থানসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল মিষ্টি বিতরণ : আপিল বিভাগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় বহাল থাকায় তার জন্মস্থান রাউজানে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয়রা। থানার মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী, শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার পর বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টিমুখ ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও রায়কে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়েছেন মানুষজন। তবে রায়কে কেন্দ্র করে রাউজানের নিজ এলাকায় কোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা যাতে না ঘটে এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ভোর থেকেই প্রস্তুতি নেয় বলে জানান ওসি প্রদীপকুমার।

রায়ের পর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা নয় মাস যুদ্ধ শেষ করে যে আনন্দ পাইনি আজ এ রায় শুনে তার চেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি। আজ সবাই স্বাধীন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাউজানের কামরুন নাহার তানিয়া লিখেছেন, ‘সাকার ফাঁসি মানে সারা বাংলার হাসি, চট্টগ্রামের রাউজানের কুখ্যাত খুনি ধর্ষণকারী।’ আমান উল্লাহ খান জাবেদ লিখেছেন, ‘পাপ বাপরেও ছাড়ে না’। ছাত্রলীগ নেতা দিদারুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা রাউজানবাসী আবারও ঈদের আনন্দ পেলাম।’ সাজ্জাদ আমিন রণি লিখেছেন, ‘১৯৭১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জাতি একটা কাক্সিক্ষত রায়ের অপেক্ষায় ছিল। আজ রাউজানের আবর্জনা পরিষ্কার হলো, বিশ্বের ১ নাম্বার বিয়াদব সাকা...।’
‘বাইতুল বিলাসে’ পিনপতন নীরবতা : ৮৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ ফরিদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর (ফকা) গ্রামের বাড়ি গহিরার কেয়ারটেকার। তিনি কেয়ারটেকার হিসেবে ১৪ বছর বয়স থেকে আছেন চৌধুরীবাড়িতে। বর্তমানে ফজলুল কাদের চৌধুরীর সন্তানদের নতুন বাড়ি ‘বাইতুল বিলাস’ দেখাশোনা করছেন। গতকাল দুপুরে ‘বায়তুল বিলাসে’ গিয়ে দেখা যায় দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি জনশূন্য। এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাড়ার লোকজন মুখ খুলতে নারাজ। তবে বাসাটির কেয়ারটেকার ফরিদকে রায়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘আমি আর কী বলব’।

সর্বশেষ খবর