বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের

সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের

ঘাম ঝরিয়ে ততক্ষণে হোটেলে ফিরে গেছেন মুশফিকুর রহিমরা। ফিরে গেছেন মিরপুরে ভালো খেলার স্বপ্ন নিয়ে। মুশফিক, সাকিবরা যখন মিরপুরের আঙ্গিনা ছাড়েন, তখন সূর্য মধ্যগগনে। আলো ছড়াচ্ছে জ্বলজ্বল করে। ঠিক সে সময় মিরপুর প্রেসবক্সে ঝড়ের গতিতে ঢুকে পড়েন মাশরাফি বিন মর্তুজা। হলুদ টি-শার্ট ও ট্রাউজার এবং দুই ফিতার স্যান্ডেল পরে মিডিয়া বক্সে ঢুকেই মাতিয়ে তুলেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেট থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজের নানা গল্প বললেন মিডিয়াকর্মীদের। বললেন কিভাবে বদলে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলছে কিভাবে। টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক গল্পচ্ছলে আরও একটি কথা বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন স্বর্ণ সময় পার করছে। ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলারই ফসল এটা। বাংলাদেশের ক্রিকেট বদলে যাওয়ার রহস্য বলার ফাঁকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করেন, ক্রিকেটাররা এখন অনেক বেশি নির্ভার। অনেক বেশি লড়াকু মানসিকতার। এই মানসিকতা নিয়েই মিরপুর টেস্টে খেলতে পারলে ফল অন্যরকম হতেই পারে। ফুলচন্দন ফুটুক মাশরাফির মুখে! আত্মবিশ্বাস কিংবা লড়াকু মেজাজের কথা যতই বলুন না কেন মাশরাফি, বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ভালো করতে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই এক সঙ্গে জ্বলে উঠতে হবে মুশফিকদের। ওয়ানডে সিরিজ হারের পর চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র, সব মিলিয়ে ক্ষুধার্ত হয়ে আছেন আমলা, স্টেইনরা। শতভাগের উপর শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত প্রোটিয়ারা। আমলাদের এই রণ প্রস্তুতির কথা বেশ ভালোভাবেই জানেন টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুশফিক। জেনেই ভালো খেলার বিষয়ে প্রত্যয়ী, ‘চট্টগ্রাম টেস্ট আমাদের ভালো কেটেছে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই আমরা ভালো করেছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ওই টেস্ট থেকে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমরা খেলতে চাচ্ছি। তবে কাজটি সহজ নয়। কেননা নিজেদের প্রমাণে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা। ভালো করতে হলে আমাদের প্রতিটি বিভাগেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।’ চট্টগ্রামে অবিশ্বাস্য না হলেও অসাধারণ ক্রিকেটে খেলেছে টাইগাররা। মুস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২৪৮ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। চার বলে তিন উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানো ‘বিস্ময় বালক’ মুস্তাফিজ তার প্রিয় ভেন্যু মিরপুরেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন! জুবায়ের তার ঘূর্ণিতে বিপাকে ফেলবেন আমলাদের। এমন ভাবনায় উইকেটও বানানো হয়েছে তাদের করে।
কিন্তু কাজটি কি সহজ? ওয়ানডে ক্রিকেটের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স স্বপ্ন দেখাচ্ছে দলকে, কিন্তু হাশিম আমলারা? কারিয়ারের সর্বোচ্চ আগ্রাসন নিয়েই হয়তো মাঠে নামবেন স্টেইনরা। চট্টগ্রামে ৩ উইকেট নিয়ে স্টেইন দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন ফোর হান্ড্রেড ক্লাবের। একটি উইকেট হলেই নাম লেখাবেন গ্রেটদের কাতারে। অবশ্য মিরপুর টেস্টের আগেই গ্রেটদের কাতারে নাম লিখেছেন ডেল স্টেইন। স্টেইন ছাড়াও মরকেল, ফিল্যান্ডারদের গতি ও সুংইয়ের সঙ্গে যুঝতে হবে তামিম, ইমরুল, লিটন, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদুল্লাদের। যাকে বলে কঠিন লড়াই!
এই লড়াইয়ে জিতলেই স্বপ্নের দেখা পাবেন মুশফিকরা। চট্টগ্রামের ফল যাতে মিরপুরেও থাকে-সেজন্য পরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামছে বাংলাদেশ। বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে বসিয়ে খেলাচ্ছে নাসির হোসেনকে। সৌম্য সরকার থাকার পরও নাসিরকে খেলানোর ব্যাখ্যা দেননি টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নাসিরকে হয়তো সাত নম্বরে বাটিং করানো হবে। এছাড়া তার অফ স্পিনকেও কাজে লাগাতে চাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তাইজুলকে বসানোর যৌক্তিক কারণও রয়েছে। দলে সাকিব আল হাসান বাঁ হাতি স্পিনার। এছাড়া জুবায়ের লেগ স্পিনার। তাই বাড়তি একজন বাঁ হাতি স্পিনার খেলানোর চেয়ে একজন ব্যাটসম্যান খেলানোর তাগিদই বোধ করেছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। লক্ষ্য একটাই, বড় স্কোর করে হার এড়ানো। সাফল্য দিয়ে মৌসুম শেষ করা।
 

সম্ভাব্য একাদশ : তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, নাসির হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ শহীদ ও জুবায়ের হোসেন লিখন।

সর্বশেষ খবর