মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি

এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।  রোজার ঈদের সময় এমনকি ঈদের পর গত সপ্তাহেও যে পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকায় এখন তা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল দেশি পিয়াজের বিক্রয়মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৬০ টাকা বা তারও বেশি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, দেশে পিয়াজের মজুদ পর্যাপ্ত থাকলেও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছে। পিয়াজ নিয়ে কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করছে বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। রবিবার বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)-এর পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কিছু ব্যবসায়ী পিয়াজ মজুদ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে। এর সঙ্গে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ভারতে পণ্যটির দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পিয়াজের দাম কিছুটা বেশি থাকলেও দেশে পণ্যটির মজুদ পর্যাপ্ত। ফলে এত বেশি দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। কতিপয় ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করতেই দাম বাড়াতে পারে গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা পুরো পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। জানা গেছে, পিয়াজের আন্তর্জাতিক মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অতিবৃষ্টি ও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে এ মুহূর্তে পিয়াজ আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মুর্তুজা রেজা চৌধুরী বলেন, স্থলবন্দরগুলোতে আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আগে যেখানে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পিয়াজ আসত দেশে, এখন সেখানে গড়ে দৈনিক ১০ ট্রাক মাল নামছে সীমান্ত দিয়ে। তবে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পিয়াজ আমদানি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দুই কর্মকর্তাকে টেকনাফে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কর্মকর্তারা জানান, ভারত ছাড়া পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার, চীন, ভিয়েতনাম ও তুরস্ক থেকে কম দামে পিয়াজ আমদানির সুযোগ রয়েছে। এসব দেশের মধ্যে কোন দেশ থেকে পিয়াজ আনলে আমদানি মূল্য কত হতে পারে সে বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য ভোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে বাণিজ্য সচিব জানান, দেশে এখনো ২০ লাখ মেট্রিক টন পিয়াজ মজুদ আছে। গত কয়েকদিন অতিবৃষ্টির কারণে সাপ্লাই চেইনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও খুব শিগগিরই পণ্যটির দাম কমে যাবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর