মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ই-টেন্ডার চালু সেপ্টেম্বরে

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ই-টেন্ডারের আওতায় আসছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজগুলো। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-টেন্ডার চালু হলে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে টেন্ডার নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ বন্ধ হবে। বর্তমানে ৮ মন্ত্রণালয় ও ৩২ বিভাগে ই-টেন্ডার চালু রয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ই-টেন্ডার চালুর পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ই-টেন্ডার বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)-কে ১ সেপ্টেম্বর থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজগুলোয় ই-টেন্ডার চালুর নির্দেশনাও দিয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, দরপত্র দাখিলের প্রচলিত পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজগুলোও ই-টেন্ডারের আওতায় আসছে। এতে দরপত্রের নামে পেশিশক্তি প্রদর্শন, সংঘর্ষ আর দলীয়করণের ঐতিহ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর ফলে বিভিন্ন কাজের দরপত্রদাতাদের সংশ্লিষ্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে দরপত্র দাখিলের প্রয়োজন হবে না। ই-মেইলের মাধ্যমে দরপত্র দাখিল করতে পারবেন আগ্রহী দরপত্রদাতারা। দেশে তো বটেই বিদেশ থেকেও কেউ ইচ্ছা করলে দরপত্রে অংশ নিতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজে ই-টেন্ডার চালু হলে দরপত্র দাখিলের নামে পেশিশক্তি প্রদর্শন বন্ধ হবে। প্রতিযোগীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দরপত্রে অংশগ্রহণ থেকে দূরে রাখার প্রক্রিয়ায় বাদ সাধবে ই-টেন্ডার পদ্ধতি। দরপত্রে অংশ নিতে ইচ্ছুক সব দরপত্রদাতার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে প্রতিটি কাজ প্রতিযোগিতামূলক দামে করা সম্ভব হবে। দরপত্রে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বর্তমানে রাজনৈতিক ক্যাডার ও পেশাদার সন্ত্রাসীদের যে দাপট রয়েছে তার অবসান হবে। সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করে সরকারি কাজ বাগিয়ে নেওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে যেমন স্বচ্ছতা আসবে, তেমনি সমাজে মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের কদর ও দাপটও কমে আসবে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের ঘাড়ে চেপে সরকারি কাজ বাগিয়ে নেওয়ার পদ্ধতির অবসান হলে জনমনে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী সম্পর্কে যে বিরূপ ধারণা গড়ে উঠেছে তার অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। এর আগে ২০১১ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-টেন্ডারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথমে চারটি দফতরে এই ই-টেন্ডারিং পদ্ধতি চালু হয়। এর মধ্যে ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতেই এই পদ্ধতি চালু করা হয়। এ ছাড়া সরকারের ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিওরমেন্ট) ওয়েব পোর্টালে থাকছে কীভাবে এই অনলাইন ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হয়। এই ই-জিপি ওয়েব পোর্টাল পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে ঠিকাদাররা দরপত্রে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ঠিকাদার রেজিস্ট্রেশন, টেন্ডার আহ্বান, দাখিল, টেন্ডার খোলা, তার মূল্যায়ন, অনুমোদন এবং কার্যাদেশ দেওয়াসহ টেন্ডার সংক্রান্ত সবরকম কাজ অনলাইনে হবে।

সর্বশেষ খবর