শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নাশকতা মোকাবিলায় সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র কিংবা নাশকতা মোকাবিলায় সতর্ক আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে ক্ষমতাসীনরা। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির দড়ি খুবই নিকটে চলে আসায় এবং জামায়াতের নীরবতায় আওয়ামী লীগকে কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, বিএনপি-জামায়াত অতীতে তাদের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে সফলতা পায়নি এটা সত্য। কিন্তু তারা তাদের ষড়যন্ত্র থেকে সরে আসেনি। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তারা এখন নতুন নতুন অপকৌশল হাতে নিচ্ছে। আসন্ন দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন বজায় থাকে সে ব্যাপারেও ইতিমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে  নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রমতে, বর্তমানে সরকারের অর্জনগুলো আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। বিদেশিরাও বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিচ্ছেন। ঠিক সে মুহূর্তে সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে এক বিশেষ মহল সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করছে। তা ছাড়া জামায়াত নেতা মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের রায় ঘিরে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কার তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাবাহিনীর হাতে। সে কারণেই গত সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে বিএনপি-জামায়াতের মদদে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। দলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পরপর দুই বিদেশির খুন হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তাদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা চেয়েছেন। একই সঙ্গে নেতারাও নিজ নিজ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সতর্ক থাকছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফরে বের হবেন। জেলায় জেলায় মতবিনিয়ম, পথসভা ও জনসভা করে সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হবে। আগামীতে সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করবেন নেতারা। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অতীতই বলে তারা হত্যা, খুন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এটা দেশবাসীর কাছে প্রমাণিত। আগে তাদের প্রধান টার্গেট ছিলাম আমরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এখন তো সেটা আরেক ধাপ এগিয়েছে। তবে আমরা সব সময় সতর্ক আছি। আমাদের তৃণমূল পর্যন্ত নেতা-কর্মীরাও যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা আলাদা আলাদাভাবে তাদের এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিলেও দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের অগ্রগতির বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের কোনো ধরনের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস করে না। দেশের অগ্রগতি উন্নয়ন কোনোটাই তাদের ভালো লাগে না। এ ছাড়া জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করা হচ্ছে। সে কারণে বিএনপি-জামায়াত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন সফরে গেলেন, আর ওই সময়ে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে লন্ডন সফরের যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি বলেন, আমরা ১৪ দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি, যে কোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির মাঠের পরাজিত জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। এর আগে গুলশানের অফিসে বসে নিরীহ মানুষ হত্যা করে সরকারের পতন ঘটাতে পারেননি। এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে যারা অমাদের দেশের উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে তাদের হত্যা শুরু করেছেন। এদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের মোকাবিলা করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে জনমত সৃষ্টি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর