শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তিউনিসিয়াকে গণতন্ত্রে ফেরানো চার সংগঠন পেল শান্তির নোবেল

প্রতিদিন ডেস্ক

তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালে বিপ্লব হয়। এরপর শুরু হয় অরাজকতা। ২০১৩ সালে দেশটিতে গণতন্ত্র যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তখন চারটি সংগঠন শান্তি প্রতিষ্ঠায় জোটবদ্ধ হয়। তাদের প্রচেষ্টায় দেশটিতে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। সে ধারা আজও অব্যাহত। এ সাফল্যের জন্য তাদের এই নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হলো। নোবেল কমিটি বলেছে, ন্যাশনাল ডায়ালগ  কোয়ার্টেট নামের শান্তি আলোচক ওই জোটটি তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রেখেছে। গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায়) নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি’ এ ঘোষণা দেয়। নোবেলজয়ী জোটভুক্ত ওই চারটি সংগঠন হলো- তিউনিসিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন, তিউনিসিয়ান কনফেডারেশন অব ইন্ডাস্ট্রি ট্রেড অ্যান্ড হ্যান্ডিক্র্যাফটস, তিউনিসিয়ান হিউম্যান রাইটস লিগ এবং তিউনিসিয়ান অর্ডার অব লইয়ার্স। নোবেল কমিটি বলেছে, তিউনিসিয়া যখন প্রায় গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে, তখন এই জোট শান্তিপূর্ণ পথে বিকল্প রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সূচনা করে। এর ধারাবাহিকতায় দেশটিতে সাংবিধানিক ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয়। নোবেল কমিটি আশা করছে, এই পুরস্কার তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রকে আরও সংহত করতে অবদান রাখবে। ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর পুলিশের দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে মোহাম্মদ বোয়াজিজি নামের এক তরুণের আত্মাহুতির মাধ্যমে তিউনিসিয়ায় আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানের রূপ পায় এবং ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট জিনে আল আবিদিন বেন আলীর ২২ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তিউনিসিয়ার জাতীয় ফুলের নামে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক অ্যান্ডি কারভিন এ গণ-আন্দোলনের নাম দেন ‘জেসমিন বিপ্লব’। পশ্চিমা গণমাধ্যমের কল্যাণে দ্রুত ওই নাম বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পায়। ‘জেসমিন বিপ্লবের’ পথ ধরে উত্তর আফ্রিকা আর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে শুরু হয় দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের দাবিতে গণ-আন্দোলনের ঝড়, যা ‘আরব বসন্ত’ নাম পায়। তিউনিসিয়ার পর মিসর আর লিবিয়াতেও দীর্ঘদিনের শাসকদের পতন দেখে বিশ্ব। নোবেল পাওয়ার পর সংগঠনটিকে শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিয়েছে গোটাবিশ্ব। টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়েছে জাতিসংঘও। পুরস্কার পেয়ে আপ্লুত সংগঠনটির প্রধান বলেছেন, ‘এই পুরস্কার আমাদের আরও ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।’ এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নে দুই শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম আসে। এর মধ্যে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও পোপ ফ্রান্সিসের নামও ছিল। নোবেল কমিটি এ বছর শান্তি পুরস্কারের জন্য ২৭৩ ব্যক্তি এবং সংগঠনকে বিবেচনায় নিয়েছিল। ২০০৬ সালে এ পুরস্কার জিতেছিলেন যৌথভ?ক্ষাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। গত বছর এ পুরস্কার পান পাকিস্তানের নারী শিক্ষা আন্দোলনের কর্মী মালালা ইউসুফজাই এবং ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী। সম্মানজনক এ পুরস্কার বিজয়ী জোটটি পাবে একটি সোনার পদক ও ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার)। চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর অসলোয় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী জোটের কর্তৃপক্ষের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। এএফপি, বিবিসি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর