বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাড়াতে হবে বেসরকারি বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়াতে হবে বেসরকারি বিনিয়োগ

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের কাক্সিক্ষত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সব ধরনের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে না পারলে এ বছর ৬ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হবে না বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। উল্লেখ্য, চলতি বাজেটে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। গতকাল সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতির হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশকালে এ তথ্য তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকার প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে বিদ্যমান ফাঁদের অবসান হলে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। এ ছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।  প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটির বিস্তারিত উপস্থাপন করেন ড. জাহিদ হোসেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা মিশনের প্রধান ড. জোহানেস জাট। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে এতে অনিশ্চয়তাও রয়েছে। চলতি অর্থবছরে অর্থনীতিতে ভালো প্রবৃদ্ধি, নিম্নমুখী মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভে ঊর্ধ্বগতি, পরিমিত বাজেট ঘাটতি থাকবে বলে মনে করে সংস্থাটি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত অর্থবছরে যে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভিতর-বাহির দুই দিক থেকেই ঝুঁকিতে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হলে আবার অর্থনীতির গতি টেনে ধরবে। সরকারি বিনিয়োগের মান নিশ্চিত না হওয়ায় পণ্য ও সেবার সরবরাহ ব্যবস্থা সংকুচিত হতে পারে। সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না প্রত্যাশিত হারে। সরকারের অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে অবকাঠামো খাতে উন্নতি হয়নি। বিশ্বব্যাপী পণ্য ও সেবার দাম কমে আসার সম্ভাবনা থাকায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে মন্দা নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তাছাড়া পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্রিয়াধীন ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আর্থিক খাত নাজুক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বর্তমানে খেলাপি রয়েছে। ব্যাংকের করপোরেট ব্যবস্থাপনা এখনো সমস্যাগ্রস্ত। ব্যবসা-বাণিজ্যে এখনো বড় বাধা হয়ে রয়েছে ঋণের প্রাপ্তির স্বল্পতা। পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েই গেছে। গত অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে মন্দের ভালো বলে মন্তব্য করেন জাহিদ হোসেন। তবে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের চাইতে প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। চীন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১০-২০১৫ পর্যন্ত বাংলাদেশে গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে চীন ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, ভারত ৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও শ্রীলঙ্কা ৭ দশমিক ১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে।

সর্বশেষ খবর