শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জব্দ হচ্ছে ১৫ জনের ব্যাংক হিসাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

জব্দ হচ্ছে ১৫ জনের ব্যাংক হিসাব

ইতালির নাগরিক তাভেলা সিজার ও জাপানের নাগরিক হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন ১৫ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ হচ্ছে। হিসাব-বহির্ভূতভাবে সন্দেহজনক অতিরিক্ত লেনদেনের কারণেই ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। সন্দেহভাজন এই ১৫ জনের তালিকায় বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুম ও হাবিব-উন নবী সোহেল ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক এক সভাপতির নাম রয়েছে। এ ছাড়া জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতার নামও রয়েছে এ তালিকায়।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডে বিদেশ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা এসেছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সন্দেহভাজন এই ১৫ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক অতিরিক্ত লেনদেন হয়েছে। বিএনপি নেতা কাইয়ুম, রংপুর থেকে গ্রেফতারকৃত কোনিও হোশির ব্যবসায়িক পার্টনার হুমায়ুন কবির হীরা এবং হীরার এক শ্যালকের ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।

সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন ইতালির নাগরিক তাভেলা ও জাপানের নাগরিক হোশি কোনিও খুনের পেছনে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। যার পুরোটাই এসেছে বিদেশ থেকে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বিএনপি ও জামায়াতপন্থি কয়েকজন প্রবাসী ব্যাপক অর্থ ঢেলেছেন।

এসব প্রবাসীর সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত কথিত ‘বড় ভাই’দের সুসম্পর্ক রয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতেই প্রবাসীদের কাজে লাগিয়েছেন ‘বড় ভাই’রা। তদন্তে নেমে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এসব তথ্য পেয়েছে। সূত্রগুলোর দাবি, দুই বিদেশিকে হত্যার জন্য অন্তত অর্ধ ডজন প্রবাসী অর্থ দিয়ে বড় ভাইদের সহায়তা করেছেন বলে তদন্ত সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে। তারা বিএনপি ও জামায়াতের মতাদর্শে বিশ্বাসী। তাদের মধ্যে চারজনের পরিচয়ও জানা গেছে। তারা হলেন জুলহাস মোল্লা রহিম উল্লাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ একলাস আলী ও বরকত উল্লাহ পাটোয়ারী। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী জুলহাস মোল্লার বাড়ি বগুড়া। আরেক যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রহিম উল্লাহ চৌধুরীর বাড়ি সিলেটে। বাকি দুজনের মধ্যে একলাস আলী মালয়েশিয়াপ্রবাসী ও বরকত উল্লাহ পাটোয়ারী আমেরিকাপ্রবাসী। গোয়েন্দারা জানান, সম্প্রতি দেশের বাইরে চলে যান বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুম। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিএনপি নেতা কাইয়ুম কীভাবে দেশের বাইরে চলে গেছেন, বিষয়টি নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরাও নিশ্চিত হয়েছি, কাইয়ুম মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন। তিনি ওই দেশে থেকেই তাভেলা হত্যাকাণ্ডের কলকাঠি নেড়েছেন। তবে হাবিব-উন-নবী সোহেল দেশেই আছেন। তিনি যেন দেশ ছাড়তে না পারেন সে জন্য দেশের সবগুলো সীমান্তবর্তী এলাকা ও বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আর সন্দেহভাজনদের মধ্যে যারা বিদেশে রয়েছেন, তাদের ব্যাপারে ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারি করার প্রস্তুতি চলছে। উলে­খ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে তাভেলা সিজারকে। এর তিন দিনের মাথায় রংপুরে খুন হন জাপানের নাগরিক হোশি কোনিও।

সর্বশেষ খবর