শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সরকারের স্ববিরোধিতায় রাষ্ট্র ঝুঁকিতে পড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের স্ববিরোধিতায় রাষ্ট্র ঝুঁকিতে পড়ছে

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ, শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ ও রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সরকার ক্ষমতাকে সংহত করতে কখনো বলছে ‘জঙ্গি’ আছে আবার কখনো বলছে ‘আইএস’ নেই। এসব স্ববিরোধী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তারা মূল ইস্যুকে মোকাবিলা করতে পারছে না। সরকারের স্ববিরোধিতায় রাষ্ট্র চরম ঝুঁকিতে পড়ছে। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে প্রেসক্লাব মিলনায়তনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আ স ম আবদুর রব। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, হুমায়ুন কবির হিমু প্রমুখ। সাবেক মন্ত্রী আ স ম আবদুর রব বলেন, সরকারের ভুল রাজনীতি, গণতান্ত্রিক চর্চাকে সঙ্কুচিত করে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্ন মতকে দমনের রাজনীতি দেশে অশান্তি ডেকে আনছে। জনগণের সমর্থন ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা করে সরকার দেশে একটি অসহিষ্ণু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যে সংকট ও শূন্যতা সৃষ্টি করেছে সেই সংকট ও শূন্যতার সুযোগে সন্ত্রাসী তৎপরতা মাথাচাড়া দিচ্ছে। ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব আরও বলেন, আমরা জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাই। কিন্তু সরকারের একনায়কতন্ত্রের কারণে দেশের সর্বত্রই অশান্তি বিরাজ করছে। তিনি বলেন, এসবের মূলে ভোটারবিহীন নির্বাচন। ভোটবিহীন অবৈধ সরকার। গণতন্ত্রহীন পার্লামেন্ট। জনগণ কথা বলতে পারে না। বিরোধী দল রাজপথে নামতে পারে না। সর্বত্র খুন, গুম, ধর্ষণের মহড়া। এমন কোনো দিন নেই যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে না। স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব বলেন, রাজপথে মিছিল-মিটিং করার সুযোগ দিলে সন্ত্রাসীরা হামলা-খুন করার সাহস পেত না। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার জনগণের কথা বলার অধিকার হরণ করেছে, রাজপথে নামলেই গুলি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব করে পার পাবেন না। যে কোনো ঘটনা ঘটলে আসামিদের ধরার আগেই নাম বলা থেকে বিরত থাকুন। উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবেন না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ ‘সন্ত্রাসী’ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলার মধ্যদিয়ে ধর্মীয় সংঘাত প্রকাশিত হচ্ছে। এসবের অস্তিত্ব আগে ছিল না। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তীব্র সমালোচনা করে আ স ম রব বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে দেশকে গৃহযুদ্ধের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ-বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগে যুদ্ধ হবে। এতে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে না। এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নতুন নতুন বিভাগ না খুলে নির্বাচনের মাধ্যমে সরে দাঁড়ান। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে কিছু ঘটলেই জঙ্গি আছে, জঙ্গি নেই এসব বলা হয়। বর্তমান সরকার যেভাবে গ্রেফতার, হামলা-মামলা করে দেশ চালাচ্ছে, এতে করে আর বেশি দিন দেশ চালাতে পারবে না।  নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম হোসেন বলেন, পরিবারতন্ত্রের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশে বিচার নেই। কথায় কথায় মামলা-হামলা, গ্রেফতার করা হয়। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বিনা বিচারে আট মাস ধরে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা জামিনও নিতে পারছি না।  বাসদের খালেকুজ্জামান বলেন, মানুষ সরকারের পরিবর্তন চায়। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সর্বশেষ খবর