রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
জেএমবির হত্যাচেষ্টা

গোপনে ঈশ্বরদী ছাড়লেন যাজক

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীর ফেইথ বাইবেল চার্চ অব গডের যাজক লুক সরকারকে গলা কেটে হত্যা-চেষ্টার পর তিনি এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তবে কী কারণে, কোথায় বা কেন তিনি এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন সে কথা কেউই নিশ্চিত করে বলছেন না। প্রশাসনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না লুক সরকারের বর্তমান অবস্থান কোথায়। তিনি মঙ্গলবার এলাকা ত্যাগ করেন। স্থানীয় পুলিশের দাবি, তিনি বদলি নিয়ে সাতক্ষীরাগেছেন। ফেইথ বাইবেল চার্চ অব গডের দক্ষিণাঞ্চলের সুপারভাইজার রেভারেন্ট ভানু বোস বলেন, তিনি ঈশ্বরদীতে কমফোর্ট ফিল না করার বিষয়টি অফিসে জানালে অফিস কর্তৃপক্ষ তাকে অবকাশযাপনের জন্য সেখান থেকে চলে যেতে পরামর্শ দেয়। পরে তিনি রিক্রেয়েশনের জন্য চলে গেছেন। তবে কথা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এত বড় ঘটনার পর তিনি কী করে সাহস করে ঈশ্বরদীতে থাকবেন। সবাই তো আতঙ্কিত। নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, কতদিন কে তাকে নিরাপত্তা দেবে, আর সব সময় বিভিন্ন স্থান থেকে তার বাসায় লোকজন আসে। এতেও তিনি বিরক্ত। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো ওয়ে নেই। ঈশ্বরদীতে ফেইথ বাইবেল চার্চ অব গডে লুক সরকারের পরিবর্তে কোনো নির্দিষ্ট করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলেও তিনি নিশ্চিত করে বলেন। ফেইথ বাইবেল চার্চ অব গডের ঈশ্বরদীর সমন্বয়ক ডা. অলোককুমার মজুমদার বলেন, তাকে নিরাপত্তার কারণে ঈশ্বরদী থেকে বদলি করা হয়েছে। তবে লুক সরকার সম্পর্কে এর চেয়ে বিস্তারিত কিছুই বলা যাবে না। ঈশ্বরদীতে লুক সরকারের ভাড়া বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলাম মলি­ক বলেন, ঘটনার পরপরই লুক সরকার তাকে জানান যে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে যে কোনো দিন তিনি তার বাসা ছেড়ে দেবেন এবং একই সঙ্গে ঈশ্বরদী ছেড়ে চলে যাবেন। তবে বিষয়টি গোপন রাখতে অনুরোধও জানান। পরে মঙ্গলবার সকালে লুক সরকার চলে যাবেন বলে জানান। এবং তার কথামতো সকাল ১০টার দিকে সব আসবাবপত্র ট্রাকে করে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তবে কোথায় যাচ্ছেন তা আমাদের জানাননি। বিকালের দিকে আমার পুত্রবধূকে ফোন করে জানিয়েছেন যে, তারা ভালোভাবে পৌঁছে গেছেন, কোথায় গেছেন তা বলেননি। তবে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর সড়ক এলাকার বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কী কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। কেননা পুলিশ এ ঘটনায় প্রথমে আওতাপাড়া থেকে এক শিবির কর্মীকে আটক করার কথা বললেও জেলা ছাত্রশিবির তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর ১২ নভেম্বর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত পাঁচ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে। তার পরপরই আÍগোপনে চলে গেলেন ধর্মযাজক লুক সরকার। পরে আরও এক জেএমবি কমান্ডারকে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) এস এম এ যাহিদ বলেন, তিনি তো চার্চে চাকরি করতেন। বদলির কারণে তিনি চলে গেছেন। চলে যাওয়ার সময় আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে সাতক্ষীরায় বদলি করায় তিনি এখান থেকে চলে যান। প্রসঙ্গত, ৫ অক্টোবর ধর্মীয় দীক্ষা নেওয়ার কথা বলে তিন যুবক ঈশ্বরদীর ফেইথ বাইবেল চার্চের যাজক লুক সরকারের ভাড়া বাসায় গিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওই দিন রাতেই এ ঘটনায় লুক সরকার বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর