রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

২২৪ আরোহী নিয়ে রুশ বিমান বিধ্বস্ত

আইএসের দায় স্বীকার

প্রতিদিন ডেস্ক

২২৪ জন যাত্রী নিয়ে মিসরের সিনাই পর্বতে বিধ্বস্ত হয়েছে রাশিয়ার একটি বিমান। মিসরের পর্যটন কেন্দ্র শারম আল শেখ থেকে বিমানটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ যাচ্ছিল। উড্ডয়নের ২৫ মিনিট পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে এ ঘটনার পর জঙ্গি সংগঠন আইএসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সিনাই পর্বতে তারা গুলি করে বিমানটিকে ধ্বংস করেছে। তবে এর সত্যতা যাচাই করতে  পারেনি মিসর ও রাশিয়া কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে থাকা চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, সাত ক্রুসহ ২২৪ আরোহীর মধ্যে ‘কেউ জীবিত নেই’। তারা জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশে অনেক যাত্রীর দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। অনেকের দেহ বিমানের সিটে বেল্ট লাগানো অবস্থায় রয়েছে। মিসর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটির ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে। এদিকে মিসর সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেরিফ ইসমাইল বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছেন। মিসরের মন্ত্রিপরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানটিতে ২১৪ জন রুশ ও তিনজন ইউক্রেনীয় ছিল। এদের মধ্যে ১৩৮ জন নারী, ৬২ জন পুরুষ ও ১৭ জন শিশু। বাকিরা বিমানের ক্রু। প্রাণহানির ঘটনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদিমির পুতিন দেশটিতে আজ রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। মিসরের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কেজিএল ৯২৬৮ নম্বরের ফ্লাইটটি মস্কো সময় সকাল ৫টা ৫৮ মিনিটে শারম আল শেখের রেড সি রিসোর্ট থেকে উড্ডয়নের পর সাইপ্রাসের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। কিন্তু ২৫ মিনিট পরেই সেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার খবর প্রচার হওয়ার পরই বিমানের আরোহীদের স্বজনরা সেন্ট পিটার্সবার্গের পলকভো বিমানবন্দরে ভিড় জমান। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এদিকে মিসরের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দেরিতে হলেও মিসরের তল্লাশি ও উদ্ধারকারী দল সিনাই ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহর আল আইরিশের ৩৫ কিলোমিটার (২২ মাইল) দক্ষিণে হাসানা এলাকায় বিধ্বস্তস্থলে পৌঁছেছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে বলা হয়, রাডারের দৃষ্টি থেকে উধাও হওয়ার সময় বিমানটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩১ হাজার ফুট উপরে ছিল।বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিমানটি দ্বিখণ্ডিত হয়েছে; পেছনের দিকের ছোট একটা অংশ পুড়ে গেছে এবং বড় অংশটি পাথরের ওপর বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা অন্তত ১০০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। বাকিরা ভিতরে আছে।’ সেন্ট পিটার্সবার্গ নগরীর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা তাস জানায়, বিমানের যাত্রীদের স্বজনদের সহায়তার জন্য পুলকভো বিমানবন্দরে একটি সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় রুশ সরকার কোলাভিয়া এয়ারলাইনের বিরুদ্ধে ‘ফ্লাইট পরিচালনা ও প্রস্তুতির বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ’-এ একটি ফৌজদারি মামলা করেছে। কোলাভিয়া এয়ারলাইনের বিমান মেট্রোজেট ব্র্যান্ড নিয়ে চলাচল করে। এর আগে ২০১১ সালে মেট্রোজেট মারাÍক দুর্ঘটনার শিকার হয়। তখন রাশিয়ার উরালে সুরগুত বিমানবন্দরের রানওয়েতেই এই সংস্থার একটি বিমানে আগুন ধরে যায়। মাত্র ১০ মিনিটের আগুনে তিনজন মারা যান এবং ৪০ জন আহত হন।

এর আগে রাশিয়ায় সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা ২০১৩ সালের নভেম্বরে। তখন তাতারস্তান এয়ারলাইনসের একটি বিমান কাজান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়ে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। এএফপি, বিবিসি, আল-জাজিরা।

সর্বশেষ খবর