শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সরকার না চাইলে ইসি নির্ভরযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না

জুলকার নাইন

সরকার না চাইলে ইসি নির্ভরযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না

বদিউল আলম মজুমদার

সরকারের প্রধানতম দুই অংশ-প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো যদি নিরপেক্ষতা প্রদর্শন না করে তাহলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলেও নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিদের কর্তব্য আছে। কিন্তু সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নিরপেক্ষ না হয় তাহলে কোনো লাভই হবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন।

বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবারই দায়িত্ব রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব শুধু নিরপেক্ষ থাকাই নয়, তাদের অবশ্যই সাহসিকতা ও কঠোরতা প্রদর্শন করতে হবে। একই সঙ্গে সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ না হয় তাহলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। সরকারের এ দুই অংশ যদি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, তাহলে নির্বাচন কমিশন চাইলেও তা ঠেকাতে পারবে না। কমিশন যত আন্তরিকই হোক নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। তাই সরকারের আন্তরিকতা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের আন্তরিকতা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার মাধ্যমেই প্রকাশিত হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের দায়িত্বশীলতা। তাদের দায়িত্বশীল আচরণ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে অনেকাংশেই সহজ করে দেয়। এ বিষয়গুলো একসঙ্গে উপস্থিত থাকলেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। আসন্ন পৌর নির্বাচনের ক্ষেত্রে কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ পায়নি। অবশ্য নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া প্রার্থীরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আগে লাগানো ব্যানার-পোস্টারগুলো সরিয়ে নিয়েছেন কিনা বা এক্ষেত্রে ইসি কতটা আইনানুগ ভূমিকা রেখেছে তা আমি নিশ্চিত নয়। তবে আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে সংঘাত হওয়ার শঙ্কা বেশি থাকে। এখন দলের মানসম্মান সামনে এসে যাচ্ছে। তাই যে কোনো সংঘাতে দলীয়ভাবেই অংশ নেওয়ার প্রবণতা দেখা যেতে পারে।

পাশাপাশি যেসব স্থানে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে তাদের সমর্থকদের সঙ্গে অন্য গ্রুপের সমর্থকদের সংঘাতের শঙ্কাও কম নয়। সুজন সম্পাদক বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজনই ইতিবাচক নয়। যদি দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে হয়, তাহলে তো দলগুলোর মনোনয়নের একটি পদ্ধতি থাকবে। কিন্তু কোথাও কোনো পদ্ধতিই দেখলাম না। রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো প্রস্তুতিও নেই। সবার আগে দলগুলোর সংস্কার দরকার, দলের মধ্যে গণতন্ত্র দরকার এবং গণতান্ত্রিকভাবে দলীয় মনোনয়নের প্রক্রিয়া চালুর আগে এভাবে দলভিত্তিক নির্বাচন কোনোভাবেই ইতিবাচক হতে পারে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর