ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, প্রার্থী ও এমপিদের প্রতি নির্বাচন কমিশন নির্দয় আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। গতকাল আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে মাঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘নালিশ’ দিয়েছে। সেই সঙ্গে বিএনপিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরাই পৌর ভোটে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন— বিএনপির এমন দাবির পরদিনই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলটি অভিযোগ জানিয়ে এলো। দুপুরে সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে বৈঠক শেষে হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির প্রতি অতি সদয় হয়ে আমাদের ওপর নির্দয় আচরণ করছে। আমরা ইসির কাছে নিরপেক্ষ আচরণ চাই বলেই এ দাবি জানাতে এসেছি। তিনি জানান, বিভিন্ন পৌর এলাকায় রিটার্নিং অফিসারদের কাছে দলীয় নেতা-কর্মী ও প্রার্থীরা হয়রানি হচ্ছেন। আবার বিএনপির লোকজন বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। আমাদের কর্মী-প্রার্থীদের অযথা জরিমানা করা হচ্ছে। মোটরসাইকেলে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে বলে জরিমানা করা হয়েছে, যা নিরপেক্ষ আচরণ নয়। আমাদের দুজন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে; বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তারা বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে। এমপিরা আচরণবিধির বেড়াজালে পড়ে প্রচারণায় নামতে না পারলেও সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রচারণায় নামছেন। এ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, ইসি এখন বিএনপির প্রতি অতি সদয় হয়ে আমাদের ওপর নির্দয় আচরণ করছে। বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ‘সন্তোষ’ প্রকাশ করে হানিফ জানান, পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার তাই করবে ইসি। যখন যেটা প্রয়োজন মনে করে সে ব্যবস্থাই নেবে। বিধি ভঙ্গের বিষয়ে তদন্ত না করে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সংসদ সদস্যরা বিধি ভঙ্গ করছেন না, প্রয়োজন হলে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে ইসি। তিনি বলেন, সংসদে না থেকে তারা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন, সুবিধা নিচ্ছেন; তাদের বাড়তি সুবিধা দিলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। প্লেয়িং ফিল্ড তাদের অনুকূলে রয়েছে। তাদের যেন বাড়তি সুবিধা দেওয়া না হয়। বিএনপি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে যাতে কোনো ধরনের বাড়তি সুবিধা না নিতে পারে এবং কারও বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে না পারে— তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় দলটি। আমরা সমস্যায় রয়েছি। আমরা ইসির নিরপেক্ষ ভূমিকা চাই। তাদের বাড়তি সুবিধা না দিয়ে ইসিকে সম-আচরণ করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকায় কিছু সংস্থাকে ভোট পর্যবেক্ষণের সুযোগ না দেওয়ার জন্যও জানিয়েছে দলটি।
