শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গি গোষ্ঠীর টার্গেটে তরুণরা

অল আউট অ্যাকশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আনিস রহমান

দেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরতে অল আউট অ্যাকশনে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গি দমনে যত রকম কৌশল নেওয়া প্রয়োজন সবটাই করা হবে। তবুও দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বিশেষভাবে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ভালো প্রযুক্তি জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তি ও আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের সন্তানদেরই তারা টার্গেট করছে। শুধু পুলিশ প্রশাসন দিয়ে কোনো দেশই জঙ্গিবাদ রুখতে পারেনি। এ জন্য সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গোয়েন্দাদের হাতে এর আগে গ্রেফতার জঙ্গিদের মধ্যে অনেকেই ছিল উচ্চশিক্ষিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জঙ্গি দমনে প্রথম থেকে শুধু জঙ্গি সদস্যদের গ্রেফতার ও তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে নানা আঙ্গিকে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ওলামা মাশায়েখ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকার ২০টি সংসদীয় আসনসহ সারা দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে ওলামা মাশায়েখ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মদপুর এবং তেজগাঁও এলাকায় সমাবেশ করেছেন। পর্যায়ক্রমে ঢাকার অন্যান্য সংসদীয় এলাকায় সমাবেশ করবেন। এ ছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক পুলিশ সদর দফতরে তিন দফায় ওলামা মাশায়েখদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকগুলোতে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। যারা ইতিমধ্যে বিভ্রান্ত হয়েছে ইসলামের মর্মবাণী তুলে ধরে আপনারা তাদের বিভ্রান্তি দূর করতে পারেন। আর যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তাদের প্ররোচনাও প্রতিরোধ করতে পারেন। তিনি বলেন, এ দেশে এক সময় চরমপন্থি, নকশাল ও সর্বহারা আন্দোলন হয়েছিল। তারা সেই সময় অনেক তরুণের মগজধোলাই করেছিল। অনেক মানুষকে হত্যা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এক সময় তারা শান্তির পথে ফিরে এসেছিল। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে এসব অপতত্পরতা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা ও জনমত গড়ে তোলা। পরিবারের পক্ষ থেকেও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের, পরিবারের, সমাজের ও দেশের স্বার্থে এসব অপতত্পরতা রোধে ভূমিকা রাখতে হবে। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়— দেশের বিশিষ্ট আলেম-ওলামাদের জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধকরণ কাজে যুক্ত করা হবে।

সর্বশেষ খবর