শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

জ্বালাও-পোড়াওয়ের জন্য বিএনপি ভোট পায়নি : প্রধানমন্ত্রী

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি মানেই মানুষ হত্যা, পুড়িয়ে মারা। জ্বালাও-পোড়াও আর মানুষ হত্যার কারণেই দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেয়নি। পৌরসভা নির্বাচনে তাদের সুমতি হয়েছে। আর মানুষ হত্যার জন্য খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া উচিত। গতকাল দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতির পিতার সমাধি কমপ্লেক্সের মুক্তমঞ্চে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে মানুষ হত্যার নামে আন্দোলন করল। পরে তারা ভুল বুঝতে পেরেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ পুড়িয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) সরকার উত্খাত করবেন, এটি চেয়েছিলেন। আর আন্দোলনের (২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে) সময় খালেদা জিয়া বলেছিলেন— সরকারের পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরবেন না। মানুষ পুড়িয়ে তিনি সরকার উত্খাত করবেন, কিন্তু পারলেন না। পরে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে কোর্টে হাজিরা দিতে গেলেন। তিনি বলেন, মানুষ পোড়ানোর দায়ে খালেদার বিচার হওয়া উচিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখলে যে দেশের উন্নয়ন হয়, সরকার তার প্রমাণ রেখেছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। এরপর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন আর থেমে থাকবে না।  সদ্য স্বাধীন দেশ গড়ায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র নির্মাণের সব কিছুই জাতির পিতা করে যান। শুধু দেশ স্বাধীন নয়, তার মতো নেতা ছিলেন বলেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশ গড়তে পেরেছিলেন। বিভিন্ন কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে তাকে হত্যা করা হলো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলার মানুষ খাদ্য পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি, এই বাংলার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই— এর চেয়ে কিছু চাওয়ার নেই। তিনি বলেন, সোনার মাটি আমাদের। উন্নয়ন হবেই। আমি কাজ করে যাচ্ছি— যেন মরলেও অন্তত বাবাকে বলতে পারব— কিছু করে এসেছি।  এর আগে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭৫-এর ১৫ আগস্টে নিহত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়ায় এসে প্রথমে মাজার কমপ্লেক্স সংলগ্ন ৫ একর জমির ওপর নির্মিত প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল পৌর শিশু পার্কের ফলক উন্মোচন করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. আব্দুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, শেখ রকিব হোসেন, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র মো. ইলিয়াস হোসেন, নবনির্বাচিত মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জা, গোপালগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবদুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল বাশার খায়ের, এ ছাড়া বাদজুমা সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকালে হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফেরেন।

সর্বশেষ খবর