রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধ বাইরের কেউ করে দেয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধ বাইরের কেউ করে দেয়নি

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি—মার্কসবাদী (সিপিআইএম)-এর পলিটব্যুরো সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাইরের কেউ করে দেয়নি। বাংলাদেশের মানুষই এ যুদ্ধ করেছে, লড়েছে এবং শহীদ হয়েছে। বাইরে থেকে অনেকেই হয়তো এ সংগ্রামে সহযোগিতা করেছে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষই এ গৌরবময় ইতিহাসের নির্মাতা। গতকাল সকালে কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভারতের বামপন্থিদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাস। স্বাগত বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। বিমান বসু বলেন, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শুরু হয়েছিল একাত্তরের অনেক আগেই। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তার সলতে পাকানো শুরু, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সেই সলতেয় আগুন জ্বালানো হয়। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বামপন্থিদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ২৯ মার্চই ভারতের বামপন্থিরা প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে ভারত সরকারের কাছে দাবি তুলেছিলেন। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যদি শুরুতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতেন, তাহলে হয়তো প্রাণহানির ঘটনা অনেকাংশেই এড়ানো যেত। তিনি অনেক পরে এসে সেই সত্য উপলব্ধি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরদিনই সিপিআইএমের পলিটব্যুরোর তরফ থেকে ‘আত্মসন্তুষ্টির সুযোগ নেই, বিজয়কে ধরেই সামনের দিকে এগোতে হবে’— এই বলে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। ভারতের প্রখ্যাত এই বাম নেতা আরও বলেন, শ্রমিক শ্রেণির সংগ্রাম, শোষিতের সংগ্রাম, পৃথিবীর তাবৎ বঞ্চিতের সংগ্রামে পাশে দাঁড়ানো বামপন্থিদের নীতি। সে কারণেই সেদিন আমরা বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। সেদিন আমরা বলেছিলাম— বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে, ভারতের গণতন্ত্রের সংগ্রামকে গলা টিপে ধরা হচ্ছে। তাই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামকে ভারতের ইন্দিরা সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে, পাশাপাশি ভারতের জনগণের গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামকে অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, সাম্রাজ্যবাদ ও দক্ষিণপন্থি মৌলবাদের চক্রান্ত ক্রমেই গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। এর চরিত্র বাংলাদেশ ও ভারতে ভিন্ন হলেও তাদের মূল উদ্দেশ্য অভিন্ন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতামুক্ত শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে চলতে চাইছে। কিন্তু চক্রান্তকারীদের চক্রান্তে এ পথে ভবিষ্যতে ফাটল ধরতে চলেছে— এটা পরিষ্কার।

সর্বশেষ খবর