বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাগ্নে মাহফুজ একাই হত্যা করেন পাঁচজনকে চার্জশিট দাখিল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে একই পরিবারের পাঁচজনকে হত্যার নৃশংস ঘটনার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের আড়াই মাস পর গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর ওই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় ইতিমধ্যে গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ভাগ্নে মোহাম্মদ মাহফুজকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ খায়ের জানান, মামলায় ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিলপাটার পাটাসহ ২৫টি আলামত। অভিযোগপত্র দাখিলের আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গত ৮০ দিন ধরে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করতে যাচ্ছি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলত আবেগ ও সামাজিক অবক্ষয় কাজ করেছে। হত্যাকাণ্ড একজনই সংঘটিত করেছে। সেই আসামিকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে আমরা অভিযোগপত্র জমা দিচ্ছি। আমরাও চাই অপরাধীর উপযুক্ত বিচার হোক। এ জন্যই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করছি। আশা করা যাচ্ছে বাদীপক্ষ যথার্থ বিচার পাবে।’ প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি রাতে শহরের বাবুরাইল এলাকা থেকে তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ছোট ভাই মোরশেদুল (২২) ও তার জা লামিয়ার (২৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ভাগ্নে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই দিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন গ্রেফতার করা হয় শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজকে। পরে ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত অন্যদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। আদালতে মাহফুজের স্বীকারোক্তি ছিল অনেকটাই গা শিউরে ওঠার মতো। মামির সঙ্গে একই বিছানায় শুতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভ থেকেই একে একে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। মাত্র চার ঘণ্টার ওই কিলিং মিশনে প্রথমে তাসলিমা ও সব শেষে হত্যার শিকার হয় স্কুলছাত্র মো. শান্ত। এর মধ্যে তাসলিমা, লামিয়া ও মোরশেদুলকে মাথায় শিলপাটার শিল দিয়ে আঘাত করে এবং শান্তকে দেয়ালে আঘাত করে হত্যা করে ভাগ্নে মাহফুজ। আঘাতের পর শ্বাস রোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আর শিশু সুমাইয়া মারা যায় শিলের আঘাতে।

সর্বশেষ খবর