মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

রওশনের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ এরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গত রবিবার সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে রওশন এরশাদের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রওশনের বক্তব্য এখতিয়ার বহির্ভূত। জাতীয় পার্টি কারও একক সম্পত্তি বা কোনো কোম্পানি নয়।’

গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রওশন এরশাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এরশাদ আরও বলেন, ‘রওশন এরশাদ কোন গণতন্ত্র অনুসারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানালেন— তা স্পষ্ট করে বলুন? দল ভাগ করা কিংবা উপদল সৃষ্টি করা কি দলীয় গণতন্ত্রের আওতায় পড়ে? তাকে বলতে হবে এ পর্যন্ত কোনটা দলীয় গঠনতন্ত্রের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?’ পার্টির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক নেতাকে হারিয়েছি— রওশনের এমন বক্তব্যের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘যে নেতারা দল ছেড়ে চলে গেছেন, তারা প্রত্যেকেই বিএনপি বা আওয়ামী লীগের মতো দল থেকে জাতীয় পার্টিতে এসেছিলেন। ওইসব দলের ভুলের কারণেই কি তারা দল ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে এসেছিলেন? জাতীয় পার্টি যখন ক্ষমতায় ছিল এবং তারা তখন উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, বা মন্ত্রী হতে পেরেছিলেন। তখন মনে হয় দলের কোনো ভুল ছিল না? যখন ক্ষমতায় ছিলাম না তখনই যেন পার্টির ভুল হয়ে গেল!’ এরশাদ বলেন, ‘রওশন এরশাদের বক্তব্যে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সংসদীয় দল পার্টির একটি শাখা মাত্র। এ শাখার দায়িত্ব— পার্টির নীতিমালা অনুসারে শুধু সংসদীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা। নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফোরাম পার্টির প্রেসিডিয়াম।’ এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একটি গঠনতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত এবং নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। গঠনতন্ত্র কোনো বিশেষ ব্যক্তির আরোপিত বিষয় নয়। এটি জাতীয় পার্টির গণতন্ত্রের দলিল— যা পার্টি প্রতিষ্ঠাকালে জাতীয় কাউন্সিলে অনুমোদিত হয়েছে। এ গঠনতন্ত্রের একটি শব্দও পরিবর্তন করতে হলে জাতীয় কাউন্সিল থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এটাই হচ্ছে দলীয় গণতন্ত্রের ধারা।’ গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘৩৯ ধারা পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আমার সৃষ্টি করা নয়। এটা জাতীয় কাউন্সিলে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। এ ধারা সম্পর্কে কারও আপত্তি থাকলে তা শুধু জাতীয় কাউন্সিলে উত্থাপন করতে পারেন। কাউন্সিল ভোটের মাধ্যমে এ ধারা বাতিল বা বহাল রাখার রায় দিতে পারে। তার আগে, যা গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে— সেটাকে অগণতান্ত্রিক ধারা বলাটাই দলীয় গণতন্ত্রকে অবমাননা করা। এই ধারা বলে রওশন এরশাদকেও দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমান প্রেসিডিয়ামের অন্তত ৩৫ জন ৩৯ ধারা বলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ৩৯ ধারা পক্ষে গেলে উপকারী। আর ব্যক্তি স্বার্থের বিপক্ষে গেলে অগণতান্ত্রিক হয়ে পড়ে— এই মানসিকতা থাকা উচিত নয়।’ দলের কাউন্সিল প্রসঙ্গে বলেন, ‘সকলের মতের ভিত্তিতে দুবার তারিখ পরিবর্তনের পর প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। ১৪ মে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয় পার্টির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবেই। তারিখ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।’

১ মে জাপার শ্রমিক সমাবেশ : আগামী পয়লা মে জাতীয় শ্রমিক পার্টির সমাবেশ। এ সমাবেশ সফল করার জন্য গতকাল জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আসরাফফুজ্জামান খান জানান, ১ মে জাতীয় শ্রমিক পার্টির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সর্বশেষ খবর