মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

অনেক দেশের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা ভালো

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনেক দেশের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা ভালো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীসহ সব ধরনের হত্যাকাণ্ডে চাপাতির ব্যবহার দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বিশেষ ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, দেশে আইএস নামে কোনো সংগঠন নেই। এসব দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশি-বিদেশি বিশেষ ষড়যন্ত্র। আমরা প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আটক করেছি। কিন্তু তারা (আটককৃতরা) আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে স্বীকার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন যে, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা অনেক দেশের তুলনায় ভালো। জাতীয় সংসদের অধিবেশনে গতকাল প্রশ্নোত্তর পর্বে দেশে বিভিন্ন সময়ে কুপিয়ে হত্যা ও আইএস-এর দায় স্বীকার নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন পাঁচজন সংসদ সদস্য (এমপি)। পঞ্চগড়-২ আসনের এমপি নাজমুল হক প্রধান, পংকজ দেবনাথ (বরিশাল-৫) ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, মো. সোহরাব উদ্দীন (কিশোরগঞ্জ-২) ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের বেগম আকতার জাহান। নাজমুল হক প্রধান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীসহ এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে চাপাতির ব্যবহার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন কুপিয়ে হত্যার বিষয়ে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না। উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ তত্পর রয়েছে। যতগুলো এই ধরনের খুন হয়েছে সবগুলোই আমরা তদন্ত করে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় সবগুলো ক্ষেত্রেই আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, চাপাতি দিয়ে খুন। এগুলো একটি দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বিশেষ ষড়যন্ত্র। যা আমরা সবসময় বলে এসেছি। আমাদের প্রশাসন এবং গোয়েন্দারা এক্ষেত্রে কাজ করছে এবং তারা সময় মতোই এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে।

পরে পংকজ দেবনাথ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর আইএসের দায় স্বীকার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এরা জঙ্গি। হোম গ্রোন এসব জঙ্গিগোষ্ঠী মাঝে মাঝে মাথাচাড়া দেওয়ার প্রচেষ্টা নেয়। তাভেলা সিজার হত্যাকাণ্ড, নেভির মসজিদে অ্যাটাক, শিয়া মসজিদের মুয়াজ্জিনকে হত্যা— এসবগুলো একই পরিকল্পনার অংশ। আমরা সবগুলো চিহ্নিত করে সব জঙ্গিকে ধরেছি। এসব হত্যাকাণ্ডের পর যারাই গ্রেফতার হয়েছে তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তাদের কেউ আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তারা হোম গ্রোন কিছু জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে থেকে এসব তত্পরতা চালাচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সব ষড়যন্ত্র বানচাল করেছে। আমরা তাদের ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ করেছি। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জঙ্গি দমনে আমরা নিরাপত্তা বাহিনী ঢেলে সাজাচ্ছি। আমরা কাউন্টার টেররিজম নামে একটি নতুন ইউনিট চালু করেছি। যার দায়িত্ব থাকবে এসব সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা। অ্যাটাক করার আগেই তাদের আস্তানা দখল করা, তাদের গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা। এ ছাড়া সাইবার ক্রাইম নামে আর একটি ইউনিট গঠন করেছি। সবগুলো জঙ্গি দমনে করা হয়েছে।

নতুন পদক্ষেপে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক আসবে না সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম আকতার জাহানের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক আসে। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিভিন্ন সময়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছে মাদক না আসার বিষয়ে। মিয়ানমারের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি, তারাও বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছে। আমরা ভারতের সঙ্গে নতুন চুক্তি করছি, এ চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পাশের দেশ ভারত থেকে আর মাদক আসবে না।

সর্বশেষ খবর