বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুপ্তহত্যার কারণ গণতন্ত্রহীনতা

শফিউল আলম দোলন

গুপ্তহত্যার কারণ গণতন্ত্রহীনতা

জয়নুল আবদিন ফারুক

দেশের বর্তমান দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিরপেক্ষ ব্যবস্থায় গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, বিগত উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণীত হয়েছে যে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন। ভবিষ্যতেও এ ধরনের একপেশে ও প্রহসনের নির্বাচনে বিএনপি কখনই অংশ নেবে না। দেশের ভিতরে চলমান গুপ্তহত্যার জন্য গণতন্ত্রহীনতাকেই দায়ী করলেন এই রাজনীতিবিদ।  গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে উপরোক্ত মন্তব্য করেন জাতীয় সংসদে নোয়াখালীর সেনবাগ এলাকা থেকে চারবার নির্বাচিত সাবেক এই এমপি। এ সময় তিনি নিজের দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়েও কথা বলেন। শত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও তিনি তার নির্বাচনী এলাকা সেনবাগে দলীয় দৃঢ় অবস্থা বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে বলেন, ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে যে কোনো অবস্থাতেই নিজের এলাকায় সাংগঠনিক ভিত শক্ত রাখা সম্ভব। সারা দেশে কমবেশি ইউপি নির্বাচনে জোর-জবরদস্তি হলেও সেনবাগ উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটিতেই এবার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভের পথে। তাছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি তো আগেই পেয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে এটা আদৌ সম্ভব হতো না। জয়নুল আবদিন ফারুক সারা দেশে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান সম্পর্কে বলেন, এ কয়দিনে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে সন্দেহজনক জঙ্গি সদস্য হিসেবে একশ এরও কম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাকিরা সবাই হচ্ছেন— হয় বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী, কিংবা সাধারণ মানুষ। ঈদের আগে এই পুলিশি অভিযান নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। মানুষ রোজা-রমজানে ধর্মীয় আচার ঠিকমতো পালন করতে পারছে না আতঙ্কে। অথচ জঙ্গি দমনের নামে সরকারের এই গণগ্রেফতার অভিযান রীতিমতো গ্রেফতার বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। সাবেক এই চিফ হুইপ তার দলের প্রধান খালেদা জিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গতকাল পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তিন সহস াধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া যারা দুই লাখ, তিন লাখ করে টাকা দিতে পারছে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যারা টাকা-পয়সা দিতে পারছেন না, তাদেরকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সব রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবির পাশাপাশি তার দলের নেত্রী খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

নিজের সংগঠনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই এমপি বলেন, গত ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিল হয়ে যাওয়ার পর কয়েক দফায় নির্বাহী কমিটির ৪২ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় স্থায়ী কমিটিসহ পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করবেন বেগম খালেদা জিয়া। আশা করি তিনি যোগ্য, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদেরই মূল্যায়ন করবেন। যারা অতীতে দল ও নিজের এলাকায় প্রকৃত অর্থেই কাজ করেছেন— তাদেরকেই মূল্যায়ন করবেন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দলের ভিতরে কমিটি গঠন ও সদ্য অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন বাণিজ্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারও দুর্নীতি বা অনিয়মের কারণে যদি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়— তবে সে ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করি। একই সঙ্গে দলের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রেও যোগ্য ও পরীক্ষিত ব্যক্তিদেরই মূল্যায়ন করবেন বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন জাতীয় সংসদের সাবেক এই চিফ হুইপ।

সর্বশেষ খবর