শিরোনাম
রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফতোয়া নয়, ওটা তাদের মতামত

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ফতোয়া নয়, ওটা তাদের মতামত

মুফতি ফয়জুল্লাহ

দেশের লক্ষাধিক আলেম-ওলামার দেওয়া জঙ্গিবিরোধী ফতোয়াকে ‘চর্বিত চর্বণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের  যুগ্ম-মহাসচিব আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ। তার মতে, এ ফতোয়ার পেছনে ‘অসৎ উদ্দেশ্য ও প্রতারণা’ রয়েছে। ওটা কোনোভাবেই ফতোয়া নয়, ওটা ছিল মতামত। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তার অভিমত ব্যক্ত করছিলেন।

জঙ্গিবিরোধী ফতোয়ার বিরোধিতা করে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘এটা কোনো ফতোয়া হয়নি। যেখানে সারা দেশের জনগণ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, সেখানে আলাদা করে ফতোয়া দেওয়ার কী আছে? তারা যে প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতিতে মতামত (ফতোয়া) নিয়েছেন সে প্রক্রিয়াটা যথাযথ হয়নি। এ প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের দ্বিমত রয়েছে। এ মতামত (ফতোয়া) নেওয়ার মাধ্যমে দেশের আলেম সমাজকে অবমাননা করা হয়েছে। যারা মতামত (ফতোয়া) নিয়েছেন তারা আলেম সমাজে বিতর্কিত হিসেবে চিহ্নিত। তাই নিজেদের জাহির করতে ফতোয়া দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন। এ ফতোয়া দেওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্যে এ ফতোয়া দেওয়া হয়েছে।’ জঙ্গিদের টার্গেট কিলিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘টার্গেট কিলিং অবশ্যই নিন্দনীয়। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যারা টার্গেট কিলিং করছে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। যারা টার্গেট কিলিং করছে তাদের দমনের জন্য কোনো সহায়তা লাগলে, আমরা অবশ্যই সরকারকে সহযোগিতার করব। টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না। টার্গেট কিলিং করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে। তাই টার্গেট কিলিং বন্ধ করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’ বন্দুকযুদ্ধের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়ে আলোচিত-সমালোচিত এ নেতা বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেক অপরাধে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধীদের বিচার হোক। বিচার ছাড়া ক্রসফায়ার কিংবা বন্দুকযুদ্ধে কোনো অপরাধী মারা যাক তা আমরা চাই না। নিরেপক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক। শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের ওপর হামলা বিষয়ে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের বসবাস করার অধিকার রয়েছে। যারা সত্যিকারের ইসলাম ধর্মের অনুসারী তারা কখনো অন্য ধর্মের অনুসারী ও তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে না। একজন মুসলিমের উচিত অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় আচার পালনে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা। আর এ দেশের একজন নাগরিক যখন অন্য দেশে সরকারের কাছে নিজেদের নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করে তখন তা সরকার ও দেশের নাগরিকের জন্য খুবই লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইনে বিরোধিতার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে দেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলাম চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। এ ছাড়া কওমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাই আমরা এ শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর