বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থ লুটপাট বন্ধে শাস্তি চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ লুটপাট বন্ধে শাস্তি চাই

সংসদের বাজেট অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে গতকাল বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, রিজার্ভ চুরির দায় কে নেবে— অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই। দেশে এখনো অনেকেই আয় বেশি হলেও কর দেন না, তাদের করের আওতায় আনতে হবে। অর্থ লুটপাট বন্ধ করতে বিশেষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন,  ‘দেশে এখনো গরিব মানুষ ঠিকমতো খেতে পায় না। কৃষকের পেটে ভাত নেই। মেয়েরা পেট ভরে খেতে পায় না, তাদের পুষ্টির অভাব কীভাবে দূর করা যায়— তা প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দেখতে হবে। গুম হত্যা বন্ধ করতে হবে। রওশন এরশাদ আরও বলেন, দেশে সুশাসন নিশ্চিত করা বিশেষ প্রয়োজন। আগের কোন সরকার কী করেছে— তা বলে লাভ নেই। তারা অধম বলে কি আপনি উত্তম হবেন না?’ তিনি বাজেটে কৃষি ও কৃষকসহ দরিদ্র মানুষের সুবিধার জন্য কৃষি খাতসহ শিল্প উন্নোয়ন খাতে কর কমানোর দাবি জানান। এ ছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়ানোর দাবি জানান। প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিরোধী দলের নেতা বলেন, এ বাজেটে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে— তা কীভাবে আদায় হবে, তার উল্লেখ নেই। প্রস্তাবিত স্বপ্ন পূরণের বাজেট যাতে স্বপ্নই না থাকে, তা দেখার জন্য তিনি অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। রওশন এরশাদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে, এ দায় কার? অর্থমন্ত্রী দয়া করে এর উত্তর দেবেন। সরকারি ব্যাংক থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। এটা কার সাহায্যে হয়েছে? এই টাকা ফিরিয়ে আনার কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে— আমরা জানি না। উনি (অর্থমন্ত্রী) কি এর উত্তর দেবেন? এ টাকা দেশের জনগণের টাকা। এই টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাজেট আলোচনায় শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি বলেন, জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলে-মেয়েরা ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করছে। তারা দেশের রাষ্ট্রপতি, রাজধানীর নাম বলতে পারে না। শিক্ষার মান বাড়ানো দরকার। এ জন্য বাজেট বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাপানে সুনামির কারণে পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রে লিকেজ দেখা দিয়েছিল। পরে তারা সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রে লিকেজ দেখা দিলে কে দেখবে? এটা হলে মানুষ আস্তে আস্তে মারা যাবে। এই বিদ্যুেকন্দ্রের বর্জ্য কোথায় রাখা হবে? এর জন্য কি কোনো চুক্তি করা হয়েছে? এ ধরনের কোনো চুক্তি না করলে রূপপুর বিদ্যুেকন্দ্র করা যাবে না। যদি বিশেষজ্ঞ না থাকে তাহলে এটা করা যাবে না। তিনি বলেন, আমাদের জানতে হবে এটা চালাবে কারা? আমরা জানি, রাশিয়ার চেরোনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে দুর্ঘটনার কথা। সেখানে শ্মশান হয়ে গেছে, সেখানে মানুষ নেই। রাশিয়া হয়তো ১০ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র চালানোর সহায়তা দেবে, তারপর কী হবে?

সর্বশেষ খবর