শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্দেশদাতা চিহ্নিত না হলে অপরাধীরা উৎসাহিত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর খুনের নির্দেশদাতা ও হোতাদের চিহ্নিত করা না গেলে ব্যাহত হবে দেশের আইনের শাসনের অগ্রযাত্রা। অপরাধীরা আরও অপরাধ করতে উৎসাহী হবে। সমাজে সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খলা। এমনটাই অভিমত দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানী, মানবাধিকার নেতাসহ অভিজ্ঞজনেরা।

সমাজবিজ্ঞানী ড. গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘মুছা ক্রসফায়ারে নিহত কিংবা গুম হয়ে গেলে মূল হোতার নাম অজানাই থেকে যাবে। নির্দেশদাতা চিহ্নিত ও গ্রেফতার না হলে সরকারের ওপর মানুষের আস্থা কমে যাবে। পুলিশকেও আর কেউ বিশ্বাস করবে না। বাবুল আক্তারকে নিয়ে যেসব কথা উঠেছে তা সত্য বলে বিশ্বাস করবে মানুষ। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে থাকবে। মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। সব মিলিয়ে দেশে সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।’ সম্মিলিত আবৃত্তি জোট, চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘কেবল মিতু হত্যার বিচার নয়, এর আগে তনুসহ ব্লগার,  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের যে হত্যা করা হয়েছে, এরও বিচার করতে হবে। তবে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে মিতু হত্যার বিচারও যদি না হয়, তাহলে সরকার ও রাষ্ট্রের বিদ্যমান আইনি কাঠামোর প্রতি মানুষের আস্থা দারুণভাবে বিনষ্ট হবে।’নারীনেত্রী অ্যাডভোকেট নূর জাহান খান বলেন, ‘দিনে-দুপুরে একজন ভদ্রমহিলাকে খুন করা হলো। এটা কোন সভ্য সমাজের রীতি! কোনো সভ্য সমাজ নিরীহ মহিলাকে খুন করা সমর্থন করতে পারে না। মিতু শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী নন। তার বাবা এবং শ্বশুরও পুলিশের কর্মকর্তা ছিলেন। পুলিশ পরিবারের একজন মহিলাকে যদি এভাবে মরতে হয়, তাহলে আপনার-আমার নিরাপত্তা কোথায়। মূল হোতাদের গ্রেফতার করা না গেলে সমাজে নিরাপত্তাব্যবস্থা বলে কিছু থাকবে না।’ বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম শাখার তথ্য ও গবেষণা সচিব আমজাদ হোসেন মনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের হোতাদের গ্রেফতার ও বিচার না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত হবে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই মিতু হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’ প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর