সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গি দমনে যতটা প্রয়োজন কঠোর হবে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বীজ বপন করে গেছে। এই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ দূর করতে সময় লাগতে পারে। কিন্তু সরকার তা নির্মূল করতে সব কিছুই করবে। জঙ্গি দমন করতে যতটা প্রয়োজন, সরকার ততটাই কঠোর হবে, এক্ষেত্রে কারও সমালোচনা শোনা হবে না। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা     বিনিময় শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেখছি সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ এর থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশে আমি নিজেই গ্রেনেড হামলার শিকার। এ ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসীদের যারা সৃষ্টি করে রেখে গেছে, একবার বীজ বপন করলে সেটা সহসা উৎপাটন করা যায় না। তিনি বলেন, শত বাধা ডিঙিয়ে হলেও জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়বে সরকার। বাংলাদেশকে অভিশাপমুক্ত করতে হবে আর সেটি আমরা করবই। গুলশান হামলার ঘটনায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিপোর্ট দিচ্ছিল, আমরা খুব সচেতনও ছিলাম। কিন্তু গুলশানে যে ঘটনাটা ঘটল, আমার মনে হয় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে জীবন্ত মানুষ উদ্ধার করা এটা কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো দেশ পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করে একটি গোষ্ঠী দেশ ও ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে। তারা ধর্ম রক্ষা করতে যাচ্ছে মানুষ খুন করে। আর খুন করছে একই ধর্মের লোক। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সেটাকে নষ্ট করার একটা চেষ্টা। আজকের পত্রিকায় এ ধরনের কিছু উল্টা-পাল্টা লেখা পড়ে দেখলাম। তারা কী উদ্দেশ্যে এটা লিখছে? বা তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ আছে কিনা এটাও খুঁজতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা শুরু করেছি। এগুলো করে কেউ যদি মনে করে বিচার বন্ধ হবে, তা হবে না। আমরা বিচারের দিক থেকে অনেক বেশি উদার মনোভাব দেখিয়েছি। যদি এ নিয়ে আরও বেশি বাড়াবাড়ি হয়, তাহলে আমাদের শর্টকাট রাস্তা খুঁজতে হবে। যুদ্ধাপরাধীরা সব চেনা। এ সময় ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ নজরদারির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের ছেলেরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করে। আমরা তো ভাবি যে, তাদের মন অনেক উদার হবে। তারা সত্যিকারের সঠিক ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান নেবে। কিন্তু তারা যে ধর্মান্ধ হয়ে যাবে সেটি কখনো আমরা ভাবতে পারিনি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াকে দুঃখজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারা তাদের বিপথগামী করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যারা, তাদের ভিতরেও কারা আছে শিক্ষার্থীদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে তাও দেখতে হবে। এ জন্য ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সজাগ থাকতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের। শেখ হাসিনা আরও বলেন, প্রত্যেক স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে কোথায় কোন ছাত্র কতদিন অ্যাবসেন্ট (অনুপস্থিত) তার রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তালিকা করে নাম, ছবি সেগুলো প্রকাশ করা দরকার। অভিভাবকদের প্রতি আমার এটাই অনুরোধ থাকবে, অভিভাবকরা  যেন খুঁজে বের করেন যে তাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় গেল।

সর্বশেষ খবর