বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিখোঁজ বাসারও নর্থ সাউথের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিখোঁজ বাসারও নর্থ সাউথের

গুলশানে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ যে ১০ যুবকের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাদের মধ্যে মোহাম্মদ বাসারুজ্জামানও লেখাপড়া করেছেন ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে। তিনি রাজশাহীর তানোর উপজেলার লালপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। সিরাজ উদ্দিন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। বাসারুজ্জামানের মামা তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে বাসারুজ্জামান নর্থ সাউথে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। বছর দুই আগে ঢাকায় বিয়ে করার পর তা আরও কমে যায়। গণমাধ্যমে ছবিসহ সংবাদ প্রকাশের পর বাড়ির লোকজন বাসারুজ্জামানের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। বাসারুজ্জামান দুই বছর আগে একটি বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছেন বলে শুনেছেন তার মামা। তবে সেই কোম্পানির নাম তিনি জানাতে পারেননি। আবুল কাশেম জানান, গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর রাজশাহী নিউ ডিগ্রি সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়েন বাসারুজ্জামান। রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকার বাড়িতে থেকেই কলেজে লেখাপড়া করেন তিনি। ৬-৭ মাস আগে তার ভাগ্নে দুই মাসের জন্য অফিসের কাজে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, পরিবারের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেননি। প্রায় একই রকম কথা বলেছেন রাজশাহীর বাসারুজ্জামানের স্বজনরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকার তেজগাঁওয়ে তার যে ঠিকানা দিয়েছে, সেটি তার শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা। নিখোঁজ হওয়ার আগে ওই বাসাতেই তিনি ছিলেন বলে তার মামার ভাষ্য। আবুল কাশেম বলেন, জোতদার পরিবারের সন্তান বাসারুজ্জামান দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। সংবাদ মাধ্যমে ছবি আসার পর তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, গত ৬-৭ মাস ধরে শ্বশুরবাড়ির কারও সঙ্গেও তার যোগাযোগ নেই। বাসারুজ্জামান ‘আওয়ামী লীগ পরিবারের ছেলে’ হয়ে জঙ্গিবাদে জড়াবে তা ‘বিশ্বাস করতে পারছেন না’ বলে মন্তব্য করেন তার মামা। তবে এ ব্যাপারে বাসারুজ্জামানের বাবা সিরাজ উদ্দিন কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তানোর থানার ওসি আবদুস সালাম বলেন, বাসারুজ্জামান বিদেশে গেছেন না দেশেই আত্মগোপন করে আছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানে হামলাকারী যুবকদের সবাই বেশ কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন, যাদের মধ্যে নিবরাস ইসলাম ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র। এর এক সপ্তাহের মাথায় শোলাকিয়ায় হামলা চালাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত আবির রহমানও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনিও চার মাস আগে নিখোঁজ হন বলে পরিবারের ভাষ্য। নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া উচ্চবিত্ত ঘরের সন্তানরা বাড়ি পালিয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ার তথ্য আসতে থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন এমন ১০ যুবকের নাম ও ছবি প্রকাশ করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর