‘আগামী কোরবানি ঈদ আপনাদের জন্য শেষ ঈদ। একাত্তর সালের মীমাংসিত যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আপনাদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণে ওই দিনই গরুর সঙ্গে আপনাদেরও কোরবানি করা হবে। দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করায় তোমাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত রয়েছে। জীবনের যাবতীয় ইচ্ছা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া গেল। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আমাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।’ এভাবে চট্টগ্রামের পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিককে উড়ো চিঠি দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডাকযোগে চিঠিটি আসে নগরীর প্রবর্তক মোড়ের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কার্যালয়ে।
পাঁচ বিশিষ্টজন হলেন— খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সদস্যসচিব ডা. চন্দন দাশ এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত বাঙালি। ড. অনুপম সেন বলেন, কে বা কারা একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে আমিসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ আছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তিনি বলেন, চলমান জঙ্গিবাদী অপশক্তির অশুভ উত্থানের এই সময়ে হুমকি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির পরিকল্পিত কর্মকাণ্ড। এসব হুমকি-ধমকিতে আমি মোটেও স্তব্ধ হব না। রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, এ ধরনের হুমকি অতীতেও পেয়েছি। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি ?বার বার আমাকে আঘাতের চেষ্টা করছে। এসব হুমকিতে আমি ভয় পাই না। রাজাকার-আলবদর, জামায়াতসহ মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমি লড়াই-সংগ্রামের পথ থেকে একচুলও বিচ্যুত হব না। সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহার বলেন, চিঠিটি কারা দিয়েছে, কোত্থেকে এসেছে এসব বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে যে কোনো নাগরিকের জীবন শঙ্কায় পড়লে তাকে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। দুজন উপাচার্যসহ পাঁচজনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চিঠিতে পাঁচজনকে সম্বোধন করা হয় এভাবে ‘চট্টগ্রামে ভারতের প্রধান দালাল ড. অনুপম সেন’, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান দালাল ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী’, ‘চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের প্রধান আওয়ামী দালাল রিয়াজ হায়দার চৌধুরী’, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের প্রধান দালাল শওকত বাঙালি’ এবং ‘গণজাগরণ মঞ্চের প্রধান দালাল ডা. চন্দন দাশ’।
