মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের স্থান হবে না

প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি বিদেশি হত্যা, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংঘাত সৃষ্টি করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বাংলাদেশে সব মানুষ ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে এক হয়ে বাস করবে, সহমর্মিতা থাকবে, সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। সব ধর্ম ও বর্ণের নাগরিকরা সমঅধিকার নিয়ে বাস করবে। এ দেশের সব ধর্মের মানুষ এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। সবার রক্ত মিশে আছে এ দেশের মাটিতে। গতকাল সন্ধ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা এই মাটির সন্তান। আপনারা আপনাদের অধিকার নিয়ে বসবাস করবেন। বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের স্থান হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি চায়, তারা সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীরা কখনো সফল হবে না। এ দেশে সব ধর্মের মানুষই সমান অধিকার নিয়ে থাকবে। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার বসবাস করার অধিকার আছে। সবাই অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। এটাই আমরা চাই। বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ছোঁয়া তো সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই পাচ্ছে। কেউ তো আর ভাগ করে নিচ্ছে না। তাহলে এ নিয়ে ভেদাভেদ থাকবে কেন? শেখ হাসিনা বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মিলেমিশে বসবাসের ঐতিহ্য আছে এখানে। এটাই বাংলাদেশের শক্তি। এখানে সব ধর্মের মানুষ সব সময় সবার উৎসবে শামিল হয়েছে। এখানে দুর্গাপূজা, ঈদ, মহররম সবাই একসঙ্গে মিলে উদযাপন করে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার— এটাই বাংলাদেশের চেতনা। ধর্মের নামে জঙ্গি তত্পরতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এসব ঘটনা ঘটায় তাদের কোনো মানবতাবোধ নেই। তারা আসলে কোনো ধর্ম বিশ্বাস করে না। তাদের ধর্ম নেই, রাষ্ট্র নেই। জঙ্গিবাদই তাদের কাজ। সব ধর্মে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, শান্তির কথা বলা আছে। কিছুদিন আগে একটার পর একটা ঘটনা ঘটে গেল। আমরা সবাইকে আহ্বান জানালাম, সবাই এক হলেন। ঐক্য গড়ে উঠল। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। আমরা সবার কল্যাণে কাজ করি। যখন ইমামদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি তখন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের জন্যও করে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিন্দুদের সম্পত্তি উত্তরাধিকারকে দিয়ে যেতে অনেক কর দিতে হতো। আমরা সেটা থেকে রেহাই দিয়েছি। এখন যে কেউ চাইলে সম্পত্তি দিয়ে যেতে পারে। হিন্দু উত্তরাধিকার আইন না থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সময় স্বামী মারা গেলে স্ত্রী করুণ অবস্থায় পড়ে যায়। সন্তানরাও দুর্দশায় পড়ে। এটা তো হতে পারে না। এর কারণ উত্তরাধিকার আইন নেই।

সর্বশেষ খবর