শিরোনাম
শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নাটকের শেষ নেই বাবুলকে নিয়ে, রহস্য উন্মোচনের আশা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

নাটকের শেষ নেই বাবুলকে নিয়ে, রহস্য উন্মোচনের আশা

নাটকের যেন শেষ নেই সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে নিয়ে। আলোচিত এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে নাটকের শুরু ১৫ ঘণ্টা জেরার ঘটনা দিয়ে। চাকরি থেকে তার অব্যাহতি নিয়ে সর্বশেষ যে ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে, তাও নাটকের অংশ বলেই মনে করছেন অনেকে। মিতু হত্যায় বাবুল আক্তার জড়িত কিনা, তাকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হলো— এমন সব বিষয় স্পষ্টীকরণে আরও নাটক হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ মনে করেন। এদিকে বাবুল আক্তারের নাটক শেষ না হলেও তার স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘এ মামলার বিষয়ে আমরা আর অন্ধকারে নেই। আমাদের কাছে অনেক তথ্য রয়েছে। নতুন করে আরও কিছু আসামির সম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের চেষ্টা করছি।’

আলোচিত এ মামলাটি তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের ‘সম্পৃক্ততার’ বিষয়টি এখনো তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে। সেই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের নির্দেশ পেলেই এ হত্যাকাণ্ডের ‘আসল রহস্য’ জনসমক্ষে উন্মোচন করা হবে।

হত্যা ঘটনায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন ও ক্রাইম) দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না কে জড়িত, আর কে জড়িত নয়। তদন্তে যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে। তবে মিতু খুনের পর থেকে মামলার অগ্রগতি ও সার্বিক অবস্থা জানতে একটিবারের জন্যও বাবুল আক্তার কিংবা মিতুর বাবা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তারা মিতু হত্যাকাণ্ডের চেয়ে বাবুল আক্তারের চাকরি নিয়ে বেশি সরব রয়েছেন, যা আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি।’

পুলিশের অন্য একটি সূত্র জানায়, মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তাই মঙ্গলবার তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চাকরি থেকে অব্যাহতির বিষয়টি গ্রেফতারের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে দেখছেন পুলিশের কেউ কেউ। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিতু হত্যা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ চলে এসেছে পুলিশের হাতে। নতুন করে উঠে এসেছে আরও কয়েকজনের নাম। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। এমনকি তাদের দু-এক জনকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

মিতু হত্যার পর ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে ১৫ ঘণ্টা ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করার পর ফের শ্বশুরবাড়ি দিয়ে আসা হয়। তখন গুজব ওঠে, মিতু হত্যার পেছনে জড়িত রয়েছেন স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। তবে এ হত্যার পেছনে বাবুল আক্তার জড়িত তা বিশ্বাস করতে নারাজ শ্বশুর-শাশুড়িসহ তাদের স্বজনরা। প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়া ৫ জুলাই পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন রাশেদ ও নবী। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মুছা ও কালু এখনো পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’।

সর্বশেষ খবর